নিজস্ব প্রতিবেদক: নারায়ণগঞ্জ শহরের বাবুরাইল বউবাজার এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে এক দম্পতি ও তাদের চার বছর বয়সী ছেলে সন্তানের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়।
নিহতরা হলেন হাবিবুল্লাহ শিপলু, তার স্ত্রী মোহিনী আক্তার মীম এবং তাদের চার বছরের ছেলে আফরান। নিহত হাবিবুল্লাহ শিপলুর গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার দাবিরন গ্রামে। পরিবারটি নারায়ণগঞ্জের বাবুরাইল বউবাজার এলাকার একটি সাততলা ভবনের চতুর্থ তলায় ভাড়া থাকে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার বিকেলে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি নাছির উদ্দিন এবং পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জামাল উদ্দিন ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। সেখানে গিয়ে দেখা যায় ভাড়া বাসার দরজা ভেতর থেকে লক করা। পরে নিহতদের স্বজন এবং স্থানীয়দের উপস্থিতিতে দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে পুলিশ। ভেতরে প্রবেশের পর শিপলুকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ঝুলতে দেখা যায়। অন্য একটি কক্ষে তার স্ত্রী মোহিনী আক্তার মীম এবং ছেলে আফরানকে বিছানায় অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। তাদের দুজনের মুখের ওপর বালিশ চাপা দেয়া ছিলো।
নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) তারেক আল মেহেদী জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে- হাবিবুল্লাহ শিপলু প্রথমে স্ত্রী এবং সন্তানকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে তিনি নিজে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন।,
তিনি বলেন, নিহত শিপলু রমজান সমিতি নামে একটি সমিতির ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। করোনা মহামারির সময় সমিতিটি বন্ধ হয়ে যায়। পরে সমিতির মালিক গ্রাহকের জমা রাখা টাকার বড় অঙ্ক আত্মসাৎ করে পালিয়ে যান। এ ঘটনার পর গ্রাহকরা সমিতির মালিক এবং শিপলুর বিরুদ্ধে মামলা করেন। এতে শিপলু প্রচণ্ড মানসিক চাপে ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। ধারণা করা হচ্ছে ওই হতাশা থেকেই তিনি এমন পদক্ষেপ নেন।
নিহত শিপলুর বড় ভাই অলিউল্লাহ লাভলু জানান, রবিবার রাত থেকে তাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিলো না। ফোনে যোগাযোগ না হওয়ায় সোমবার বিকেলে স্বজনরা ফ্ল্যাটে গিয়ে দরজা বন্ধ দেখতে পান। অনেক ডাকাডাকির পরও ভেতর থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকার পর দেখি, আমার ভাই ঝুলছে আর ভাবি ও ভাতিজার মুখের ওপর বালিশ চাপা দেয়া।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদী বলেন, এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এবং তদন্তের ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আমরা সবদিক থেকে তদন্ত করছি। আইনগত প্রক্রিয়া চলছে।,
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.