ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়িতে লুটপাট চলছেই

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভাঙচুরের পাশাপাশি লুটপাট অব্যাহত রয়েছে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িটিতে। গতকাল শনিবার টানা চতুর্থ দিনের মতো ভাঙা চলেছে সেখানে। এদিনও যে যা পেরেছেন, লুটে নিচ্ছেন। একই এলাকার ৫ নম্বর সড়কের শেখ হাসিনার বাসভবন সুধা সদনে অনেকটাই নীরবতা নেমে এসেছে। এই লুটপাটের মধ্যে দুই বাড়ির কোনোটিতেই পুলিশ কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্যকে চোখে পড়েনি।

গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, অনেক শ্রমজীবী মানুষ এসে সেখানে লুটপাটে অংশ নিয়েছেন। বাড়িটির শেষাংশ শাবল ও হাতুড়ি দিয়ে ভাঙার কাজে ব্যস্ত ছিলেন তারা। বিভিন্ন কক্ষের দেয়াল ভেঙে ইট বের করে নিচ্ছিলেন অনেকে। কেউ আবার বাড়ির বিভিন্ন তলা থেকে রড ও লোহা কাটছেন। কেউ হাতুড়িপেটা করে আংশিক বের হয়ে থাকা রড পুরোটা বের করেছেন। কেউ আবার ভাঙাড়িতে বিক্রি করা যাবে-এমন যা যা পাচ্ছেন, সবই নিচ্ছেন।

এক যুবককে দেখা গেল একটি ভ্যানে করে পুড়ে যাওয়া ও ভাঙা একটি গাড়ির অংশ বিশেষ তুলে নিয়ে যেতে। নিজের নাম-পরিচয় উল্লেখ না করে তিনি জানালেন, ভাঙাড়ির দোকানে নিয়ে বিক্রি করে দিয়ে যা পাওয়া যাবে, সেটাই তার লাভ।

গুঁড়িয়ে দেওয়া বাড়িটির একটি কলামে হাতুড়ি-শাবল দিয়ে আঘাত করে করে ভেতরের রডগুলো বের করার চেষ্টা করছিলেন জিগাতলা এলাকা থেকে আসা আসলাম মিয়া। সঙ্গে ছিলেন দুই ছেলে ও স্ত্রী। আসলাম বলেন, সকাল ৮টায় এসে ভাঙার কাজ শুরু করেছেন তারা। ভাঙা শেষ করতে আরও ঘণ্টা দুয়েক লাগতে পারে। সেখান থেকে ২০-২৫ কেজি রড পাওয়া যেতে পারে। যা ৭০০-৮০০ টাকায় বিক্রি করা যাবে।

ভবনটির সামনের জায়গায় আবদুল আজিজ ও জসীম উদ্দিন নামে দুই যুবককে দেখা গেল, সেখানে উপড়ে ফেলা একটি কাঁঠাল গাছ কুঠার দিয়ে কাটায় ব্যস্ত। তাদের সামনে রাখা ছিল একটি ঠেলাগাড়ি। আজিজ জানান, গাছটি ছোট ছোট টুকরো করে কেটে ঠেলাগাড়িতে করে নিয়ে যাবেন। পরে সেগুলো লাকড়ি বানিয়ে বিক্রি করবেন।

লুটপাটের এমন দৃশ্যপটের মধ্যে লোহালক্কড় কিনতে ভিড় জমিয়েছেন ভাঙাড়ি ব্যবসায়ীরাও। রীতিমতো যেন দোকান বানিয়ে বসেছেন সেখানে। এমন একজন ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী শিকদার আলী জানান, তিনি এখানে এসেছেন সকাল সাড়ে ৯টায়। দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ৫০ কেজির মতো রড ও কিছু ভাঙা টিন, কাচ, প্লাস্টিক ইত্যাদি কিনেছেন। রডের মানভেদে ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে কিনছেন। এগুলোই আবার তিনি বেশি লাভে বিক্রি করবেন অন্যদের কাছে।

লুটপাটের উদ্দেশ্যে আসা এসব শ্রমজীবী ও ছিন্নমূল মানুষের পাশাপাশি গতকালও উৎসুক হাজারো মানুষের ভিড় দেখা গেছে বাড়িটির চারপাশে। মোবাইলে ছবি কিংবা ভিডিও করছিলেন তাদের কেউ কেউ।

ভূতুড়ে পরিবেশ সুধা সদনে

ধানমন্ডি ৫ নম্বর সড়কের ৫৪ নম্বর বাড়ি সুধা সদন এখন অনেকটাই নীরব। আশপাশের অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দাদের কয়েকজন জানান, আগের তিন দিন সেখানে উৎসুক মানুষের ভিড় ছিল। শনিবার দুয়েকজন ছাড়া তেমন কেউই আসেননি।

তবে অল্প কয়েকজন শ্রমজীবী ও ছিন্নমূল মানুষকে এদিনও ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া চারতলাবিশিষ্ট সুধা সদনের ভেতরে শেষ সময়ের লুটপাটে অংশ নিতে দেখা গেছে। তারা পুড়ে যাওয়া কাঠ, টুকরো লোহা আর ধাতব বস্তু সংগ্রহ করে নিয়ে যান।’

Facebook
Twitter
WhatsApp
Pinterest
Telegram

এই খবরও একই রকমের

অনলাইন গণমাধ্যমের জন্য বিজ্ঞাপন নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: অনলাইনে গণমাধ্যমের জন্য বিজ্ঞাপন নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।’ আজ মঙ্গলবার রাজধানীর সার্কিট হাউস রোডের

ভারতে পালানোর সময় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারতে পালানোর সময় নওগাঁ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ। মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) ভোরে জেলার সাপাহার উপজেলার আইহাই

সুইস ব্যাংক থেকে টাকা সরিয়ে নিচ্ছেন বাংলাদেশিরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে গত এক বছরে বাংলাদেশিদের অর্থ আমানতের পরিমাণ নজিরবিহীন হ্রাস পেয়েছে। ২০২৩ সালে দেশটির ব্যাংকগুলোতে আমানতের পরিমাণ সাড়ে ৫ কোটি সুইস

‘ফুটবলে যুক্ত হচ্ছে নীলকার্ড’

বাংলা পোর্টাল: খেলাকে সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য এবং শৃঙ্খলা ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ফুটবল খেলায় লালকার্ড ও হলুদকার্ড দেখান রেফারি। তবে এই ‍দুই কার্ডের পাশাপাশি শাস্তিমূলক

নিউইয়র্কে বন্দুকধারীর এলোপাতাড়ি গুলি, ২ বাংলাদেশি নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্কের বাফেলোতে অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় শনিবার (২৭ এপ্রিল’) বিকেলে তাদের গুলি করে হত্যা করা হয় বলে

ঢাকা-চট্টগ্রাম স্বপ্নের ডাবল লাইন চলাচলের জন্য প্রস্তুত।

আলতাফ হোসেন শামীম,চট্টগ্রাম প্রতিনিধি ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইনের দূরত্ব ৩২১ কিলোমিটার। গুরুত্বপূর্ণ এ রেলপথের পুরোটাই ডাবল লাইন হলেও দীর্ঘকাল ধরে আখাউড়া থেকে লাকসাম পর্যন্ত ৭২ কিলোমিটার ডাবল