
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে দুই ভাই গুমের মামলায় গ্রেফতার হওয়া আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের তিন নেতাকে দুই দিনের রিমান্ড শেষে আজ (মঙ্গলবার) কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আসামীরা হলেন—শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম, উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদ ও যুবলীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ। তারা পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করায়, গত ২ আগস্ট শিবগঞ্জ আমলী আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও শিবগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এসএম সাকিল হাসান জানান, “রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের সময় আসামীদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য যাচাইয়ের পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।” তদন্তের স্বার্থে অতিরিক্ত কিছু বলা সম্ভব নয় বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মামলার বাদী মো. আইনাল হক অভিযোগ করেন, “এখনো অনেক আসামী গ্রেফতার হয়নি। তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি। গ্রেফতারকৃত তিনজনসহ সকল আসামির ফাঁসি চাই। জীবিত থাকতে তাদের শাস্তি দেখতে পারাই আমার একমাত্র কামনা।”
অভিযোগ রয়েছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জে অতীতে জামায়াত, বিএনপি ও ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের সাধারণ ব্যক্তিদের গুম, ক্রসফায়ার ও অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের সশস্ত্র ক্যাডার, প্রভাবশালী নেতা, পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। অনেক ভিকটিম এখনও নিখোঁজ, আবার অনেককে গুমের পর জঙ্গি ও অন্যান্য মামলায় ফাঁসিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১৭ আগস্ট মিজানুর রহমানকে নিজ বাড়ি থেকে এবং একই বছরের ২৭ ডিসেম্বর রাজশাহীর সাহেববাজারের এসএস প্লাজার ছাত্রাবাস থেকে রাত ১০টার দিকে ছাত্রনেতা রেজাউল করিমকে গুম করা হয়। এরপর থেকে তাদের কোনো খোঁজ মেলেনি। গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সালে বাদী আইনাল হক শিবগঞ্জ থানায় মামলা করেন (মামলা নং-২৫, জি.আর নং-৪৭৪/২৪)। মামলায় ১০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, এ পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ঘটনাটি স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গন ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি করেছে। গুমের শিকার পরিবারগুলো দ্রুত বিচার ও দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবিতে অবস্থান নিয়েছে।