
ডেস্ক রিপোর্ট: পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে দুই আওয়ামী লীগ নেতার মাঝে বসে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতার সমাবেশ করার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। রোববার (২৪ আগস্ট) সকাল থেকে ফেসবুকে ওই সমাবেশের ছবি ছড়িয়ে পড়লে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, আওয়ামী লীগের দুই প্রভাবশালী নেতা কীভাবে একই মঞ্চে বিএনপির এই নেতার পাশে বসেন।
জানা যায়, ঘটনাটি ঘটে গত শনিবার (২৩ আগস্ট) বোদা উপজেলার পাচপীর ইউনিয়নের মেনাগ্রামে সনাতন সম্প্রদায়ের আয়োজিত ধর্মীয় সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ব জাগরণে অনুষ্ঠিত সমাবেশে। সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদ। ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যায় তার বামে ছিলেন দেবীগঞ্জ উপজেলার পামুলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান মণি ভূষণ রায় এবং ডানে ছিলেন বোদার পাঁচপীর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা ও নৌকা প্রতীকের নির্বাচিত চেয়ারম্যান অজয় কুমার রায়।
স্থানীয়রা জানান, মণি ভূষণ রায় ২০২১ সালে নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হন। এর আগে তার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারিসহ বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের উপর জুলুম-নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। অপরদিকে অজয় কুমার রায়কে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এবং বোদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আলম টবির ঘনিষ্ঠ হিসেবে চেনে এলাকাবাসী।
এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই রাজনৈতিক মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অনেকেই বলছেন, মাঠের রাজনীতিতে মতাদর্শের সীমানা ক্রমেই অস্পষ্ট হয়ে পড়ছে এবং বিএনপি নেতারা ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের বিতর্কিত নেতা-কর্মীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছেন।,
এ বিষয়ে বিএনপির নেতা ফরহাদ হোসেন আজাদ বলেন, অনুষ্ঠানটি বিএনপির কোন রাজনৈতিক অনুষ্ঠান ছিল না। এটি এই এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের দুর্গা পূজার প্রস্তুতি সহ আগামী ২১ আগস্ট মহালয়া অনুষ্ঠানের প্রস্ততি সভা ছিল। তাদের এই অনুষ্ঠানে আমি আমন্ত্রিত ছিলাম মাত্র। অনুষ্ঠানে কে কোন দলের মানুষ আমার পাশে বসলো এটা আমার দেখার বিষয় নয়, যারা আমার পাশে বসেছিল তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা। কোন অপরাধের কারণে তারা অপরাধী হলে তাদের জন্যে দেশে আইন রয়েছে।
তিনি বলেন, তারা এক সময় আওয়ামী লীগ করেছে এখন তারা তাদের ভুল বুঝতে পেরেছে। তাছাড়া এই এলাকাটিতে আমার বাড়ি এলাকার সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে আমার একটা আত্মিক সম্পর্ক। বিগত সময়ে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে একটি মহল এলাকায় নানা রকমের অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করেছিল। সে সময় বিএনপি হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিল। তাদের পূজার অনুষ্ঠানে বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকরা পাহারা দিয়েছে। এই অঞ্চলের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ জাতীয়তাবাদী দলের আদর্শকে লালন করে। একটি মহল বিএনপির আদর্শকে ভিন্ন খাতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। নানা রকমের ট্যাগ লাগিয়ে এলাকায় আমাকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে। এরা দলের শত্রু। সময় হলে আমার নির্বাচনী এলাকার মানুষ তা প্রমাণ করে দিবে।,