
ডেস্ক রিপোর্ট: কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে ৬০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ পাহারাদারকে পিটিয়েছেন দেলোয়ার হোসেন নামের এক যুবদল নেতা। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই পাহারাদারকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে উপজেলার সদর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। পরে শুক্রবার বিষয়টি জানাজানি হয়। বর্তমানে আহত পাহারাদার দুলা মিয়া বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আহত দুলা মিয়া বুড়িচং উপজেলার পূর্বপাড়া এলাকার মৃত সেকান্দর আলীর ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে রাতের বেলা বাজার পাহারার কাজ করে আসছেন।,
অন্যদিকে অভিযুক্ত দোলোয়ার হোসেন উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব ও বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক। তবে দেলোয়ার হোসেনের দাবি, যুবদল নেতা হিসেবে নয়; বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনে অবহেলার ঘটনায় কথা–কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে বাজার পাহারা দেওয়ার সময় কিছুক্ষণ বিশ্রামের জন্য এক মোড়ে একটি টুলে বসেন দুলা মিয়া। তখন যুবদল নেতা দেলোয়ার হোসেন সেখানে এসে পাহারাদারের ওপর ক্ষিপ্ত হন। কেন পাহারা না দিয়ে বসে আছেন প্রশ্ন করলে দুলা মিয়া ক্লান্ত হওয়ার কথা বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দেলোয়ার হাতে থাকা কাঠের টুকরা দিয়ে এলোপাতাড়ি তাকে পেটান। এতে তার পিঠ ও ঘাড়ে একাধিক আঘাত লাগে। পরে আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন ও অন্য পাহারাদারেরা তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
হাসপাতালের বেডে শুয়ে দুলা মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, তিনি আমাকে কুকুরের মতো পেটাতে থাকেন। একপর্যায়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। প্রাণ বাঁচাতে তার পায়ে ধরে ক্ষমা চাই। তবুও থামেননি। পরে অন্য পাহারাদাররা এসে আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
আহতের ছেলে গিয়াসউদ্দিন বলেন, আমার বাবা দীর্ঘদিন ধরেই রাতে পাহারার কাজ করছেন। প্রতিদিনের মতো সেই রাতেও তিনি দায়িত্বে ছিলেন। সকালে লোকমুখে খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে দেখি বাবা গুরুতর আহত অবস্থায় শুয়ে আছেন। আমরা এই ঘটনার সঠিক বিচার চাই।,
অভিযোগের বিষয়ে যুবদল নেতা দেলোয়ার হোসেন বলেন, দুই দিন আগে বাজারে একটি মোবাইলের দোকানে চুরির পর পাহারাদারদের নির্দেশনা দেওয়া হয়, দায়িত্ব পালনের সময় কেউ বিশ্রাম নিতে পারবেন না, ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না। কিন্তু তিনি বসে বসে ফোনে ফেসবুক চালান। গতকাল রাতেও এ ঘটনা ঘটেছে। তিনি যে গলিতে দায়িত্ব পালন করছিলেন, সেটি ছিল স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের গলি। পরে কথা–কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয়। এখন বিষয়টি নিয়ে তার দলীয় পরিচয় সামনে এনে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। বাজার কমিটির সদস্যরা বসে বিষয়টি সমাধান করবেন।
বুড়িচং থানার ওসি মোহাম্মদ আজিজুল হক বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে খোঁজখবর নিয়েছি। ভুক্তভোগীর পরিবারকে অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু তারা অভিযোগ দিতে রাজি হচ্ছেন না। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।,