ডেস্ক রিপোর্ট: ইসরাইলে দাবানলের তাণ্ডবের মধ্যেও গাজা উপত্যকায় ইসরয়েলি সামরিক হামলা অব্যাহত রয়েছে। ভয়াবহ দাবানলে পশ্চিম ইসরায়েলের বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। পরিস্থিতি এতটাই বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে যে, সরকার জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি করেছে। অন্যদিকে, গাজায় প্রতিদিনই বাড়ছে নিহতের সংখ্যা ও খাদ্য সংকট, মানবিক বিপর্যয় পৌঁছেছে ভয়াবহ পর্যায়ে।
প্রবল তাপদাহ, খরা ও দমকা বাতাসের কারণে দাবানলের আগুন ইতোমধ্যেই জেরুজালেমের উপকণ্ঠে পৌঁছে গেছে। ঘন ধোঁয়ায় ঢেকে গেছে মহাসড়ক, বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে রাজধানীর সঙ্গে বিভিন্ন অঞ্চলের যোগাযোগ। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনীর প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। আগুনে দগ্ধ ও ধোঁয়ায় আক্রান্ত হয়ে অন্তত ২৩ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে।
নিরাপত্তার স্বার্থে জেরুজালেম-তেলআবিব মহাসড়কসহ একাধিক রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। একজন সন্দেহভাজনকে পূর্ব জেরুজালেম থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যিনি ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন লাগানোর চেষ্টা করেছিলেন বলে সন্দেহ।
একই সময়ে ইসরায়েলি বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে গাজা উপত্যকায়। বৃহস্পতিবারই কেবল হামলায় ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে এক শরণার্থী শিবিরের এক পরিবারের ৫ সদস্যও রয়েছেন। দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস ও শেখ রেদোয়ান এলাকাতেও ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের খবর পাওয়া গেছে।
ইসরায়েলি অবরোধের কারণে গাজার সীমান্তে প্রায় ৩ হাজার ত্রাণবাহী ট্রাক আটকে আছে, যা প্রবেশ করতে পারছে না। গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৯২ শতাংশ শিশু ও গর্ভবতী নারী অপুষ্টিতে ভুগছে। জাতিসংঘ গাজাকে ‘দুর্ভিক্ষ কবলিত’ অঞ্চল ঘোষণা করার আহ্বান জানিয়েছে।
এই মানবিক ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যেও প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে হামাস। আল-কাসাম ব্রিগেড দাবি করেছে, রাফা অঞ্চলে হামলায় কয়েকজন ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে। ইসরায়েলও উত্তর গাজায় একজন সেনা নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে।
একদিকে দাবানলের আগুনে পুড়ছে ইসরায়েলের বন ও জনপদ, অন্যদিকে ইসরায়েলি বোমা ও খাদ্য সংকটে প্রতিনিয়ত মৃত্যুবরণ করছে গাজার শিশু ও নারীসহ সাধারণ মানুষ—এই দুই বিপর্যয়ের সম্মিলিত চিত্র আজ গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিশ্ববাসীর কাছে।'