নিজস্ব প্রতিবেদক: খুলনা নগরের শান্তিধাম মোড়ে ‘পঞ্চবীথি ক্রীড়া চক্র’ ক্লাব দখল করে বানানো গণঅধিকার পরিষদের কার্যালয় উচ্ছেদ করেছে স্থানীয় ‘ছাত্র-জনতা’। গতকাল মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) রাত সাড়ে ৯টার দিকে ওই ভবন দখলমুক্ত করা হয়। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় ঘটনা ঘটে।'
শান্তিধাম মোড়ে পঞ্চবীথি ক্রীড়া চক্র ক্লাবটির কার্যক্রম যে ভবনে পরিচালনা করা হতো, সেটি মূলত গণপূর্ত বিভাগের একটি দ্বিতল ভবন। ভবনের দ্বিতীয় তলায় ক্লাবের কার্যক্রম চলত। নিচতলায় ছিল আরও কিছু কার্যালয়। ২০১০ সালের দিকে গণপূর্ত বিভাগ থেকে নিজেদের নামে বরাদ্দ নিয়ে আসে পঞ্চবীথি ক্রীড়া চক্র। এরপর ১৪ বছর ধরে সেখানে ক্লাবের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন সংগঠনটির কর্মকর্তারা।
গত ২৭ জানুয়ারি দুপুরের দিকে গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীরা ক্লাবের তালা ভেঙে ঢুকে দখলে নেন। সেদিনই পঞ্চবীথি ক্রীড়া চক্রের সাইনবোর্ড খুলে ফেলে সেখানে ‘গণঅধিকার পরিষদ, খুলনা মহানগর ও জেলা কার্যালয়’ লেখা একটি ব্যানার টাঙিয়ে দেন। পাশাপাশি পুরো ভবনটি নেতা-কর্মীদের ব্যানারে ভরা ছিল। ক্লাব ভবন দখল করে নিজেদের কার্যালয় করার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ওই দিন রাতেই গণঅধিকার পরিষদের খুলনা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক শেখ রাশেদুল ইসলামকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। তারপরও রাশেদুল কার্যালয়টি দখলে রেখে সেখানে দলীয় কাযক্রম চালাতেন।
মঙ্গলবার রাতে যখন গণঅধিকার পরিষদের কার্যালয় দখলমুক্ত করা হয়, তখন রাশেদুল সেখানে ছিলেন। তিনি দাবি করে বলেন, কার্যালয়ের মধ্যেই তারা তারাবিহর নামাজ পড়ছিলেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা ওই কার্যালয়ে হামলা করেন। তারা (বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন) কার্যালয়ের আসবাব ভাঙচুর ও তাদের মারধর করে সেখান থেকে বের করে দিয়েছেন। এ সময় তাদের হামলায় তিনিসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।'
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহসমন্বয়ক ও খুলনা জেলার সদস্য সচিব সাজিদুল ইসলাম বাপ্পী বলেন, এটি একটি সরকারি ভবন। সেখানে ইজারা নিয়ে পঞ্চবীথি ক্রীড়া চক্র ক্লাব কাযক্রম পরিচালনা করত। সেই ক্লাব দখল নিয়ে রাজনৈতিক কার্যালয় বানানো হয়েছিল। ছাত্র-জনতা আজ ওই ভবনটি দখলমুক্ত করতে এসেছিল। এ সময় গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের হামলায় অন্তত ১০ জন ছাত্র-জনতা আহত হয়েছেন।
সাজিদুল ইসলাম দাবি করেন, দখলমুক্ত করার কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যুক্ত নয়। তবে দলের অনেকেই যেহেতু শিক্ষার্থী, তাই তারাও সাধারণ মানুষের সঙ্গে সেটি দখলমুক্ত করতে গিয়েছিলেন।'
খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার সানোয়ার হুসাইন বলেন, ‘গণপূর্তের ভবনটি গণ অধিকার পরিষদ দখল করে নিয়েছিল। হঠাৎ করে এনসিপি দলের নেতা-কর্মীরা সেটি দখলমুক্ত করতে আসে। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে কিছুটা পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। উভয় পক্ষের অনেকেই আহত হয়েছেন বলে শুনেছি। ভবনটির পাহারায় এখন পুলিশ আছে। ভবনটি গণপূর্তের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’