
নিজস্ব প্রতিবেদক: শনিবার যশোরে সর্বোচ্চ ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এটাই চলতি বছরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এ দিন রাজধানীতে তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। তাপমাত্রা বাড়লেও গত বছরের চেয়ে এখনো কম রয়েছে। গত বছর যশোরে সর্বোচ্চ ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। ১৯৭৬ সালের পর এটাই ছিল সর্বোচ্চ রেকর্ড।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, শনিবার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তীব্র তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। এরমধ্যে রাজশাহী ও খুলনা অঞ্চলের তীব্র তাপদাহ সবচেয়ে বেশি। রাজধানী ঢাকাও তাপদাহের মাত্রা তীব্র। দেশের অন্যান্য বিভাগেও তাপদাহ বইছে। তাপদাহে সারা দেশে জনজীবনে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা বিরাজ করছে। তবে এরমধ্যেই তাপমাত্রা কমার সুখবরও দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সারা দেশে বয়ে যাওয়া এ তাপপ্রবাহ শিগগিরই কমে আসবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহানাজ সুলতানা বিকেল ৪টার দিকে আমার দেশকে বলেন, রোববার পর্যন্ত এ অবস্থা চলার পর সোমবার থেকে তাপদাহ প্রশমিত হতে পারে। রোববারও তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে। এর পরে সোম ও মঙ্গলবারেও একই প্রবণতা অব্যাহত থাকার তথ্য জানানো হয়েছে। এতে সোমবার থেকে দেশের কোথাও কোথাও বৃষ্টি ও কালবৈশাখী হতে পারে।
আবহাওয়াবিদদের মতে, চলমান এ পরিস্থিতি আগামী ১২ মে-এর আগে বা পরে কিছুটা প্রশমিত হতে পারে। এ সময় তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে বেড়ে সর্বোচ্চ ৪২ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যেতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।
তাপপ্রবাহ চলাকালীন সবাইকে সতর্ক থাকতে এবং প্রয়োজনে বাইরে যাওয়া এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন আবহাওয়াবিদ শাহীনুর ইসলাম।
কয়েকদিন আগেই আবহাওয়া অধিদপ্তর পূর্বাভাস দিয়েছিল ৪-৫দিন বৃষ্টির পর মৃদু থেকে মাঝারি, আবার কোনো কোন অঞ্চলের তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। সেই পূর্বাভাসই যেন সত্যি হলো।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমুল হক আমার দেশকে বলেন, বৃহস্পতিবারই ৭২ ঘণ্টার তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা জারি করা হয়। শুক্রবার সেই সতর্কবার্তা আরও বর্ধিত করা হয়। তিনি বলেন, এরই মধ্যে তাপপ্রবাহ তীব্র হয়েছে। এ অবস্থা আগামী ১১ মে নাগাদ চলতে পারে। এরপর ১২ মে থেকে কিছুটা প্রশমিত হতে পারে।
শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায়, ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন রাজধানীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একদিনের ব্যবধানে আগের দিনের রেকর্ড ভেঙ্গে যশোরে বছরের সর্বোচ্চ ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। রাজধানীতেও আগের দিনের তুলনায় তাপমাত্রা বেড়েছে। আগের দিন রাজধানীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হলেও শনিবার রেকর্ড ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এর আগে ২৮ মার্চ দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় যশোরে ৪১ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস। একই দিন রাজধানীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর ২৩ এপ্রিল যশোরে ৩৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত থাকলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলা হয়। তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তা মাঝারি তাপপ্রবাহ। তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তীব্র তাপপ্রবাহ ধরা হয়। তাপমাত্রা ৪২-এর বেশি হলে তা অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বলে গণ্য হয়।’