
নজরুল ইসলাম: সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সুফলভোগীদের পুকুর দখল ও জোরপূর্বক মাছ চাষাবাদের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা যুবদলের দুই নেতার বিরুদ্ধে। এনিয়ে ভুক্তভোগীরা চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যে মানববন্ধন ও থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও কোনো সুরাহা না পাওয়ায় ভুক্তভোগীদের মধ্যে ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।
অভিযুক্তরা হলেন তাড়াশ উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাজীব আহমেদ মাসুম ও যুগ্ম আহ্বায়ক শুকুর মির্জা।
এরআগে মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় উপজেলার দেশীগ্রাম ইউনিয়নের গুরপিপল ছয়গাটি পুকুরপাড় এলাকায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সুফলভোগীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া সুফলভোগীরা জানান,
গত ৫ আগস্ট তাড়াশ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মসগুল আজাদের কাছে পুকুরটি লিজ নেওয়ার জন্য আবেদন করা হলে তিনি মাছ চাষ শুরু করার পরামর্শ দেন। পরে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের উদ্যোগে দুটি গ্রুপ একত্রিত হয়ে প্রায় ৮০টি সুফলভোগী পরিবার যৌথভাবে পুকুরে মাছ চাষ শুরু করেন।
কিন্তু কিছুদিন পর যুবদল নেতা মাসুম ও শুকুর দলবল নিয়ে এসে পুকুরে পোনা মাছ ছেড়ে দাবি করেন, ওই পুকুর তাদের দখলে। তারা সুফলভোগীদের হুমকি দিয়ে বলেন, এ পুকুরে মাছ চাষ করতে হলে প্রতি পক্ষকে দুই লাখ টাকা দিতে হবে। এ ঘটনায় বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ জানালেও কোনো প্রতিকার না পেয়ে সুফলভোগীরা মানববন্ধন ও থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযুক্ত যুবদল নেতা রাজীব আহমেদ মাসুম বলেন, সবাইকে জানিয়ে সুফলভোগীদের চার লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। প্রকৃত উপকারভোগীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে চাষাবাদ করছি।
অন্য অভিযুক্ত শুকুর মির্জা দাবি করেন, ৮০ জন সুফলভোগীর মধ্যে প্রকৃত ৩০ জনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আমরা চাষাবাদ করছি। তবে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ব্যতীত অন্য কেউ চাষ করতে পারেন কি না—এ প্রশ্নের জবাবে তিনি নির্দিষ্ট কোনো উত্তর দিতে পারেননি।
তাড়াশ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মোকাররম হোসেন বলেন, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের মৎস্য চাষ সমিতিভিত্তিক প্রকল্প। এখানে সাবলিজ দেওয়ার নিয়ম নেই। আমরা বিষয়টি যাচাইয়ের জন্য মাঠে লোক পাঠিয়েছি। সত্যতা পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউর রহমান বলেন, আমরা ইতিমধ্যে ঘটনার বিষয় নিয়ে তদন্ত করছি। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।