ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগে নজিরবিহীন পদ বাণিজ্য: ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘ বিরতির পর ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ মহানগর আওয়ামী লীগের থানা এবং ওয়ার্ডের প্রস্তাবিত নাম কেন্দ্রে জমা পড়ে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে এ কমিটিগুলোর নাম জমা দেয়া হয়। আর এ জমা দেয়ার পরই সৃষ্টি হয়েছে চাঞ্চল্য। অভিযোগ উঠেছে যে, ঢাকা উত্তর এবং দক্ষিণে ওয়ার্ড এবং থানা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠনে নজিরবিহীন পদ-বাণিজ্য হয়েছে।

লাখ লাখ টাকার বিনিময় হয়েছে এবং এর সাথে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা জড়িত। এবিষয়টি জানার পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এনিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু এর মধ্যেই বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার গোচরে এসেছে। তিনি এনিয়ে ক্ষুব্ধ হয়েছেন তার নির্দেশে এই কমিটি গুলো স্থগিত হয়ে আছে। আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, এই কমিটি গুলো অনুমোদিত হচ্ছে না। এগুলো বাতিল হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী কারা কারা পদ-বাণিজ্য করেছেন তা খতিয়ে দেখার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।’

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম ঢাকা মহানগরের দায়িত্বে আছেন। তিনি এখন দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তিনি এলে এব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতি খবর পেয়েছেন, লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে কমিটিতে লোক নেয়া হয়েছে। এনিয়ে আওয়ামী লীগের অন্তত দু’জন প্রেসিডিয়াম সদস্যের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন বলেও জানা গেছে। আওয়ামী লীগের যে দু’জন প্রেসিডিয়াম সদস্য এ মহানগরীর কমিটিগুলোর দেখভালের দায়িত্বে আছেন তাদের পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলেছেন এবং কারা কত টাকা খেয়েছে তার হিসেবও বের করতে বলেছেন। পদ-বাণিজ্য করে কমিটিতে নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে সেই কমিটিগুলো আর অনুমোদিত হচ্ছে না।

উল্লেখ্য যে, দীর্ঘদিন ধরেই, আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণে ওয়ার্ড এবং থানা কমিটিগুলো হচ্ছিল না। এনিয়ে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা একাধিকবার ঢাকা মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে অনুরোধ করছিলেন। দীর্ঘ অনুরোধের পর অবশেষে তারা কমিটি চূড়ান্ত করে। কিন্তু এখানে দলের ত্যাগী পরীক্ষিত নেতাদের বাদ দিয়ে টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন অনাহূত এবং আগন্তুককে অন্তুর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি ঢাকা উত্তর এবং দক্ষিণের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ টাকা খেয়ে কমিটিতে নাম ঢুকিয়েছেন এমন অডিও প্রধানমন্ত্রীর হাতে এসেছে। আর একারনে এই বিষয় নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।

আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য স্বীকার করেছেন যে, ঢাকা মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণের থানা এবং ওয়ার্ড কমিটি নিয়ে কিছু সমস্যা হয়েছে। এখানে নিয়োগ বাণিজ্য এবং পদ-বাণিজ্যের কিছু কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এসেছে। এবং এ অভিযোগগুলো প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। আর একারণে আপাতত কমিটিগুলোকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন দেয়া হচ্ছেনা।

শুধু অর্থ নয় কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য গাড়ি পর্যন্ত দেয়ার অভিযোগ এসেছে বলে আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য জানিয়েছেন। আর এই বিষয় নিয়ে এখন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা অনুসন্ধান করছেন। অনুসন্ধানের মাধ্যমে যারা দোষী প্রমাণিত হবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে আপাতত যে কমিটিগুলো ঢাকা মহানগরের উত্তর এবং দক্ষিণের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছিলো সে কমিটিগুলো অনুমোদিত হচ্ছে না। নতুন করে কমিটি কি ঢাকা মহানগরের উত্তর দক্ষিণের নেতৃবৃন্দ করবেন নাকি কেন্দ্র থেকে কমিটিগুলো করা হবে এব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি।’

Facebook
Twitter
WhatsApp
Pinterest
Telegram

এই খবরও একই রকমের

তরুণ প্রজন্মই সব বৈষম্য দূর করে পরিবর্তন আনতে পারে: মির্জা ফখরুল

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তরুণ প্রজন্মই পারে সব বৈষম্য দূর করে সকল স্তরে দেশের বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে। সমাজের সব অসংগতি

গ্রেপ্তারের ভয় ছাড়ছে না বিএনপি নেতাদের’ নিজস্ব প্রতিবেদক দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপির আত্মগোপনে থাকা নেতাকর্মীরা কর্মসূচিতে প্রকাশ্যে অংশ নিতে শুরু করেছেন। তিন মাস আত্মগোপনে থাকা বিএনপির নেতাকর্মীরা যখন ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসছেন, তখনো নতুনভাবে গ্রেপ্তারের ভয়ে আছেন তারা। বিএনপির অভিযোগ, গ্রেপ্তারের পাশাপাশি আবারও নতুনভাবে ঢাকা মহানগরসহ বিভিন্ন এলাকায় দলীয় নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় পুরোনো মামলায় নতুনভাবে আসামি দেখিয়ে আটকের ঘটনা ঘটছে। এমন অবস্থায় তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ভয়ভীতির মধ্যেই দিন কাটাচ্ছেন। গ্রেপ্তার আতঙ্কে অনেকেই ঘরবাড়ি কিংবা এলাকা ছাড়া। জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি’) দ্বাদশ সংসদ অধিবেশনের প্রথম দিন প্রতিবাদ হিসেবে কালো পতাকা মিছিল কর্মসূচি দিয়েছিল বিএনপি। তারও আগে ২৬ ও ২৭ জানুয়ারি মহানগর ও জেলা পর্যায়ে একই কর্মসূচি পালন করেছে দলটি। কিন্তু পুলিশ মঙ্গলবার রাজধানীতে কোথাও কালো পতাকা মিছিল করতে দেয়নি বলে বিএনপির অভিযোগ। বরং ওইদিন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নতুনভাবে শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নতুনভাবে দায়েরকৃত ছয়টি মামলায় ৪৫৬ জনের বেশি নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। ৭০ জনের বেশি নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। ওইদিন রাজধানীর উত্তরায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খানের সঙ্গে অশালীন আচরণ করে এবং ধাক্কা দিয়ে জিপে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। যদিও তাকে পরবর্তী সময়ে পুলিশ ছেড়ে দেয়। সে সময় মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদসহ সংগঠনের ৪ নেত্রীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। একই দিনে বাগেরহাটের রামপালে বিএনপির কালো পতাকা মিছিল থেকে দলটির কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনিও কিছুদিন আগেই মুক্তি পেয়েছিলেন।’ বিএনপির অভিযোগ, গত বছরের ২৮ অক্টোবরের পর বিরোধীদের মাঠে দাঁড়াতে দিচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নেতাকর্মীদের যাকে যেখানে পেয়েছে, গ্রেপ্তার করেছে। এখনো বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনসহ বিরোধী নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে তল্লাশির নামে হামলা চালানো হচ্ছে। সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আকবর হোসেন এবং তার পুত্র সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন রনির বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পুলিশ পরিচয়ে অভিযান চালানো হয়েছে। ওই পরিবারের অভিযোগ, এ সময় বাড়ির লোকজনদের সঙ্গে অশালীন আচরণ ও ‘লুটপাট’ করা হয়। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘বন্দুকের নলে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের পর সরকারের তথাকথিত মন্ত্রি-এমপিরা এখন আরও বেসামাল কথাবার্তা বলছেন। অবৈধ সরকার বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশকে লেলিয়ে দিয়েছে। সম্প্রতি বিএনপির পূর্বঘোষিত শান্তিপূর্ণ কালো পতাকা মিছিলে হামলা-নির্যাতন চালিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি ও বিরোধী নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে পুলিশ পরিচয়ে তল্লাশির নামে হামলা-ভাঙচুর করা হচ্ছে।’ বিএনপির নীতিনির্ধারকরা জানান, বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের আত্মগোপনে থাকা নেতাকর্মীরা ধীরে ধীরে মাঠের রাজনীতিতে ফিরে আসার চেষ্টা করছেন। অনেকেই কারাগার থেকে ছাড়াও পেয়েছেন। হামলা-মামলা উপেক্ষা করে কৌশলে কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছেন। ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশের তিন মাস পর গত ২৬ ও ২৭ জানুয়ারি রাজধানী ঢাকা ও জেলায় জেলায় কালো পতাকা মিছিলে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায় অনেককে। তাদের এ উপস্থিতি তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে আশা জাগিয়েছে। আবারও রাজপথে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে সরকারবিরোধী দলগুলো। কিন্তু গত ৩০ জানুয়ারি সারা দেশে কালো পতাকা মিছিল কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় অনেকের মধ্যে আবারও কিছুটা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এ কারণে পরবর্তী কর্মসূচি প্রণয়নে বিএনপি কিছুটা সময় নেবে। বিএনপির দপ্তর সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যনুযায়ী ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশের ৪-৫ দিন আগে থেকে অদ্যাবধি মোট গ্রেফতার হন ২৫ হাজার ৬৪৪ জনের বেশি নেতাকর্মী। বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান ভূঁইয়া মিল্টন গণমাধ্যমকে বলেন, একতরফা ডামি নির্বাচন করেও স্বস্তিতে নেই অবৈধ সরকার। তাদের সবসময় পতনের আতঙ্ক তাড়া করছে। এজন্যই বিএনপির শীর্ষ নেতাদের জামিন না দিয়ে দমন-পীড়ন অব্যাহত রেখেছে।’

নিজস্ব প্রতিবেদক: দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপির আত্মগোপনে থাকা নেতাকর্মীরা কর্মসূচিতে প্রকাশ্যে অংশ নিতে শুরু করেছেন। তিন মাস আত্মগোপনে থাকা বিএনপির নেতাকর্মীরা যখন ধীরে ধীরে

ছোট বোনকে সঙ্গে নিয়ে টুঙ্গিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী

পদ্মা সেতুর রেলপথ উদ্বোধন ও ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আয়োজিত জনসভা শেষে ব্যক্তিগত সফরে নিজ জন্মস্থান গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় ছোট বোন শেখ

সিরাজগঞ্জ উল্লাপাড়ায় শতভাগ ফেল করা ৪ মাদ্রাসাকে শোকজ

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সদ্য প্রকাশিত দাখিল পরীক্ষার ফলাফলে শতভাগ ফেল করা সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার ৪ মাদ্রাসাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে। শনিবার (১৮ মে’) উপজেলা মাধ্যমিক

গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব আটকে দিলো যুক্তরাষ্ট্র!

অনলাইন ডেস্ক: গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং অবাধ মানবিক সহায়তা প্রবেশের আহ্বান জানিয়ে একটি প্রস্তাবের ওপর বুধবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভোটাভুটি হয়েছে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর কারণে

খুলনায় নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে ৩ শ্রমিকের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক: খুলনায় নির্মাণাধীন ‘কর ভবন’ থেকে পড়ে তিন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর’) সকালে নগরীর বয়রা মহিলা কলেজের বিপরীত পাশে নির্মাণাধীন কর ভবন