
জুয়েল রানা: উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার খ্যাত সিরাজগঞ্জ। যমুনা সেতু পশ্চিমে -হাটিকুমরুল রোডে প্রায় প্রতিদিন রাতেই ঘটছে ডাকাতি ঘটনা। দরজায় কড়া নারছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঢাকা থেকে গ্রামে ঈদ করতে এই মহাসড়ক দিয়ে প্রায় ২২ জেলার মানুষ যাতায়াত করবে। কিন্তু দু:খের বিষয় হচ্ছে যমুনা সেতু পশ্চিম-সিরাজগঞ্জ রোড পর্যন্ত প্রতিনিয়ত ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। আর ডাকাতরা প্রথমে সিরাজগঞ্জ রোড থেকে নলকা ব্রীজ পশ্চিম পর্যন্ত প্রায় ১২টি চোরাই পয়েন্ট’র ঘরেই অবস্থান করে। রাত্রী যত গভীর হয় চোরাই গাড়ি দিয়ে যাতায়াত করে মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গা ডাকাতি করতে ওঁত পেতে থাকে। দিনরাত ২৪ ঘন্টাই চোরাই পয়েন্টগুলো চোরাই মাল ক্রয়-বিক্রয় করা হয়। মহাসড়কে চোরাই মাল নামানো ও উঠানো ও ক্রয় বিক্রয়ের সময় টহলরত পুলিশের গাড়ি দেখলে পুলিশ কিছু না বলে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশকে প্রতি মাসে হাদিয়া দেয় বলে মহাসড়কে চলাচলরত পথচারীরা সমালোচনা করতে থাকে। সাম্প্রতি, ( ৬ ই মার্চ ২০২৫ইং ) রাতে ঢাকার যাত্রাবাড়ি কোনাপাড়া এলাকা থেকে দুইটি ট্রাক এসএসআরএম কোম্পানির ১৪ টন রড নিয়ে শেরপুরের উদ্দেশ্য রওনা করে পরবর্তীতে ট্রাক ৭ ই মার্চ অনুমানিক রাত চারটার সময় ঢাকা মোট্রো ট -২০- ০৮৬১ ট্রাকটি সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার শোলমাইল এলাকার ওমর আলীর ছমিলের কাছে পৌছলে দুইটি প্রাইভেটকার থামিয়ে র্যাব পরিচয়ে তল্লাশীর কথা বলে ড্রাইভার হেলপারকে হাতপাবেধে প্রাইভেট কারে তুলে ট্রাকটি ছিনতাই করে। ৮ ই মার্চ ভোরের দিকে সলঙ্গা থানার সাতটিকরি এলাকায় নামিয়ে দেয়। এ ঘটনায় রডের মালিক রায়হান আলী ও ট্রান্সপোর্ট কর্তৃপক্ষ ( ট্রাক মালিক) রবিউল আওয়াল রায়গঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনায় রায়গঞ্জ থানা পুলিশ সলঙ্গা থানার পাঁচলিয়া এলাকার আওয়ামীলীগ নেতা ভাটা রফিকের ছোট ভাই পাঁচলিয়া বাজারের রড সিমেন্টে ব্যবসায়ী এরশাদুলের দোকান থেকে লুটকৃত রড উদ্ধার সহ ম্যানেজার সাদ্দাম কে আটক করে।
পরবর্তীতে সলঙ্গা থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে আশরাফুলের চোরাই পয়েন্ট থেকেও রড সহ চোর চক্রের এক সদস্যকে আটক করতে সক্ষম হয়।
এ ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন আ.লীগ নেতা ভাটা রফিকের ছোট ভাই এরশাদুল ইসলাম। পুলিশের অভিযান অব্যহত থাকলেও ভাটা রফিকের প্রকাশ্যই দৌড়ঝাপের কারনে ধরাছোয়ার বাইরে এরশাদুল ইসলাম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাঁচলিয়া এলাকার অনেকেই জানান, ভাটা রফিক দীর্ঘদিন আ.লীগের রাজনীতির সাথে জরিত থেকে তার ভাইকে দিয়ে হাটিকুমরুল থেকে নলকা ১২টি চোরাই পয়েন্ট থেকে ডাকাতির রড সিমেন্ট এনে বিক্রি করত। রাতে চুরি হওয়া রড গোডাউনে ডুকত রাতেই। এখন সরকার পতনের পর সে নিজেকে বিএনপি পরিবারের সন্তান ও বিএনপি কর্মী পরিচয় দিয়ে এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। ভাটা রফিকের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে চাঁদাবাজি ও জমিদখল সহ চেক ডিজ ওয়ানারের একাধিক অভিযোগও রয়েছে। তার ভাইকে দিয়ে চোরাই রড সিমেন্টের ব্যবসার কথা এলাকার অনেকেই জানে। কিন্তু উগ্রপন্থী ও প্রভাবশালী হওয়ায় তার ভয়ে এলাকার কেহই মুখ খোলেন না।
তার বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে চেক জালিয়াতির মামলা ও মামলার বাদিকে অপহরণের ও মামলা রয়েছে।
রহিম নামের পাঁচলিয়া এলাকার একজন জানান, ভাটা রফিকের বিরুদ্ধে এলাকায় অনেক অভিযোগ রয়েছে ,তার ভাই এরশাদুল চোরাই রড সিমেন্টের ব্যবসা করে ইতিপূর্বে শুনেছিলাম। সেদিন নাকি পুলিশ তার গোডাউন থেকে মালামাল সহ তার ম্যানেজারকে আটক করে নিয়ে যায়। কিন্তু এরশাদুল এখনও ধরাছোয়ার বাইরে আছে। অদৃশ্য কারণে তাকে আটক করা হচ্ছে না।
তাকে আটক করলেই এলাকার চুরি ডাকাতি বন্ধ হবে।
এ বিষয়ে জানতে , ভাটা রফিক তার ভাই রড সিমেন্টের দোকান মালিক এরশাদ মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করা হলে তারা ফোন রিসিভ করেন নাই।
এ ব্যাপারে সলঙ্গা থানার ভারপাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোখলেছুর রহনান বলেন, ডাকাতির ঘটনা যানি না,আমি ১২ তারিখে যোগদানের পরে ঈদকে সামনে রেখে দিন রাতে মোট ৯ টিম দিয়ে কাজ করছি।
এমন ঘটনা থাকলে তাত্ক্ষণিক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিব।মহাসড়কের চোর চক্র সদস্যদের আটকে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে,এ ঘটনায় দোকান মালিক এরশাদ পলাতক রয়েছে বলে জানান,রায়গঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান।