ঠিকানা টিভি ডট প্রেস: বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকা প্রকাশ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদভিত্তিক সাময়িকী টাইম ম্যাগাজিন। এ তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং প্রভাবশালী প্রযুক্তিবীদ ইলন মাস্কের সঙ্গে স্থান পেয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
টাইম ম্যাগাজিন আর্টিস্ট, আইকনস, লিডারসহ কয়েকটি ক্যাটাগরিতে তালিকা প্রকাশ করেছে। এ ক্যাটাগরিগুলোর মধ্যে লিডারস ক্যাটাগরিতে স্থান পেয়েছেন ড. ইউনূস।
লিডারস ক্যাটাগরিতে প্রথমেই রয়েছে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারমের নাম। এর পর রয়েছে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া সেইনবোমের নাম। তৃতীয়তে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, চতুর্থতে মারিয়া কোরিনা মাচাডো, পঞ্চমে ইলন মাস্ক এবং ৬ষ্ঠতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নাম রয়েছে।
লিডারস ক্যাটাগরিতে ড. ইউনূসের পর হাওয়ার্ড লুটনিক, টেড্রোস আধানম ঘেব্রেইসাস এবং জে ডি ভ্যান্সের নাম রয়েছে। যদিও এ তালিকায় কে কত নম্বর অবস্থানে রয়েছেন সেটি জানানো হয়নি।
প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় স্থান পাওয়া ড. ইউনূসকে নিয়ে টাইম ম্যাগাজিনকে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ফার্স্ট লেডি ও প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিলারি ক্লিনটন বলেছেন, “ছাত্রদের নেতৃত্বাধীন অভ্যুত্থানে গত বছর বাংলাদেশের স্বৈরশাসক প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর, একজন চেনা নেতা: নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস দেশকে গণতন্ত্রের দিকে নেতৃত্ব দিতে এগিয়ে আসেন।”
প্রোফাইলটিতে ড. ইউনূসের দারিদ্র্য বিমোচনে যুগান্তকারী কাজের কথা স্মরণ করা হয়-বিশেষত ১৯৭০-এর দশকে প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের মাধ্যমে, যার মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠী-বিশেষ করে নারীরা-ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে জীবিকা গড়ে তোলার সুযোগ পান।
হিলারি ক্লিনটন লেখেন: “দশকখানেক আগে, ইউনূস বাংলাদেশে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন, যার মাধ্যমে সবচেয়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ছোট ঋণ দিয়ে ক্ষমতায়ন করা হয়। এর ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষ-যাদের ৯৭ শতাংশই নারী-ব্যবসা গড়ে তুলেছেন, পরিবার চালিয়েছেন এবং মর্যাদা ফিরে পেয়েছেন।”
তিনি ড. ইউনূসের সঙ্গে নিজের ব্যক্তিগত সম্পর্ক এবং বিশ্বজুড়ে তার প্রভাবের কথাও স্মরণ করেন।
“আমি প্রথম ইউনূসকে দেখি যখন তিনি আরকানসাসে এসেছিলেন, তখন বিল ক্লিনটন গভর্নর ছিলেন এবং আমরা যুক্তরাষ্ট্রে একই ধরনের প্রকল্প শুরু করতে চেয়েছিলাম। সেই থেকে আমি পৃথিবীর নানা প্রান্তে ঘুরে ইউনূসের কাজের অসাধারণ প্রভাব প্রত্যক্ষ করেছি-জীবন বদলে গেছে, সমাজ উন্নত হয়েছে, আশার আলো ফিরেছে।”
আবারও জাতীয় রাজনীতির কেন্দ্রে ফিরে আসা ড. ইউনূস এবার কেবল অতীতের অবদানের জন্য নয়, বরং বর্তমান সময়েও বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন ও নাগরিক স্বাধীনতা রক্ষায় তাঁর ভূমিকায় নতুন করে স্বীকৃতি পেয়েছেন।
“এখন আবার ইউনূস তাঁর দেশের ডাকে সাড়া দিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশকে দমন-পীড়নের ছায়া থেকে বের করে এনে মানবাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করছেন, জবাবদিহিতা দাবি করছেন এবং একটি ন্যায়ভিত্তিক ও স্বাধীন সমাজের ভিত্তি স্থাপন করছেন।”
টাইম ১০০ তালিকায় প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে যেসব ব্যক্তি প্রভাব, উদ্ভাবন ও নেতৃত্বের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন, তাঁদেরকে সম্মান জানানো হয়।'