
ঠিকানা টিভি ডট প্রেস: হাতে তাদের হাতকরা আর পায়ে শিকল। লাইন ধরে এক এক করে ওঠানো হচ্ছে বিমানে। না, তারা বড় কোন দাগী আসামী বা যুদ্ধবন্দি নন। অবৈধ অভিবাসী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করাই তাদের অপরাধ।
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস থেকে ১০৪ জন অবৈধ ভারতীয়কে নিয়ে বুধবার ভারতের পাঞ্জাবে অবতরণ করে মার্কিন সামরিক বিমান। যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তরক্ষী বাহিনী ইউএস বর্ডার পেট্রল মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্সে সেই ভারতীয়দের ভিডিও প্রকাশ করেছে।
যেখানে দেখা যায়, কাগজপত্রবিহীন অবৈধ এসব ভারতীয় অভিবাসীর হাত-পা শিকল দিয়ে বেঁধে বিমানে ওঠানো হয়। ভিডিওতে আরও দেখা যায়, বিমান বাহিনীর সেই সি-১৭ বিমানের পেছনের দিকটি খোলা। প্রথমে সেখানে ঢোকানো হয় একটি বিশালাকৃতির কার্গো। এরপর শিকলে বাঁধা একেক করে অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীদের প্রবেশ করানো হয়। ভারতীয়রা বিমানটিতে ওঠার পর তাদের পেছনে পেছনে ওঠেন মার্কিন সেনারা। দেশে ফেরার পর দুঃসহ সেই অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেন পাঞ্জাবের বাসিন্দা হরবিন্দর সিং।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতে আসার সেই উড়োজাহাজ যাত্রাকে ‘নরকের চেয়েও জঘন্য’ বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘এটি ছিলো দীর্ঘ ৪০ ঘণ্টার বিমানযাত্রা। আমাদের সবার হাতে হাতকড়া পরানো ছিল। পা ছিল শিকলে বাঁধা। আসন থেকে এক ইঞ্চিও সরতে দেওয়া হয়নি। এমনকি শৌচাগারে যেতেও বারবার অনুরোধ করতে হয়। টেনেহিঁচড়ে শৌচাগারে নেওয়া হয়। শৌচাগারের দরজা খুলে ক্রুরা ধাক্কা দিয়ে ভেতরে ঠেলে দেন।
এ ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর গোটা ভারত জুড়ে ওঠে সমালোচনার ঝড়। যার উত্তাপ ছড়ায় দেশটির পার্লামেন্টেও। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এস জয়শংকর তার বক্তব্যে বলেন, আমরা মার্কিন সরকারের সাথে যোগাযোগ করছি। আমরা নিশ্চিত করবো যেন ফ্লাইটের সময় ভারতীয়দের সাথে কোনওভাবে দুর্ব্যবহার না করা হয়। তবে তার বক্তব্যের মাঝেই প্রতিবাদ শুরু করেন উপস্থিত বিরোধী দলীয় পার্লামেন্ট সদস্যরা। এ ঘটনায় লোকসভা ও রাজ্যসভা সাময়িকভাবে মুলতুবিও করতে হয়।’