নিজস্ব প্রতিবেদক: চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট বাজার থেকে পচা, ফাটা ও ঝরে পড়া আম সংগ্রহ করছে দেশের নামিদামি জুস কোম্পানিগুলো। জনপ্রিয় এই আম হাটে চলতি মৌসুমে অন্তত ১০টি আড়তের মাধ্যমে এসব নিম্নমানের আম প্রতি কেজি ৫ থেকে ২০ টাকা দরে কেনা হচ্ছে।
বুধবার সকালে বাজার পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, আশপাশের এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা ঝরে পড়া ও অগ্রহণযোগ্য আম এনে বিক্রি করছেন জুস কোম্পানির নির্ধারিত আড়তে। মুসলিমপুর-হামেদনগর এলাকা থেকে আসা ব্যবসায়ী রফিক আলী জানান, তিনি প্রতিদিন এই ধরনের আম সংগ্রহ করে আড়তে দিচ্ছেন এবং প্রতি কেজিতে ৩-৪ টাকা লাভ হচ্ছে।
এক আড়তদার মো. বাবুল জানান, এসব আম নামিদামি জুস কোম্পানির প্রতিনিধিদের কাছে সরবরাহ করা হয়। অপর একজন ক্রেতা মোরসালিন হক বলেন, “আমরা বাজারে বিক্রয়যোগ্য নয়, এমন আমই কিনি। বাজারের প্রথম সারির ভালো আম কখনোই তারা নেন না, শুধু নামেই প্রচার চলে।”
এই প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আমচাষিরা। কানসাটের চাষি মুক্তারুল বলেন, “ঈদ ও ছুটির কারণে কিছুদিন বাজারে ধীরগতি থাকলেও এখন আমের দাম বাড়ছে। কিন্তু উদ্দেশ্যমূলকভাবে কানসাট আমের সুনাম নষ্টের অপচেষ্টা চলছে।”
আবদুস সামাদের আড়তের প্রতিনিধি রাজু জানান, প্রতিদিন ল্যাংড়া, লকনা ও গুটি জাতের ঝরেপড়া আম প্রায় আড়াইশ’ থেকে ৩শ’ ক্যারেট জুস কোম্পানিগুলোর কাছে সরবরাহ করা হয়। এসব আড়তে কোম্পানির জন্য আলাদা শ্রমিকও নিয়োজিত রয়েছেন।
শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজাহার আলী বুধবার বিকেলে বাজার পরিদর্শন করে জানান, খিরসাপাত আম প্রতিমণ ৪০০০ থেকে ৪৫০০ টাকা, ল্যাংড়া ও গুটি জাতের আম ৩০০০ থেকে ৩৫০০ টাকা এবং ব্যানানা জাতের আম ৫০০০ টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রি হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ৩৭ হাজার ৫০৪ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৮৬ হাজার টন, যা থেকে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.