
জহুরুল ইসলাম, স্টাফ রিপোর্টার: টাঙ্গাইলের মধুপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় কলেজছাত্রী অথৈ মনির মৃত্যুর ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়রি (জিডি) না করায় আটদিন পর আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের মা আলেয়া বেগম এই মামলায় চার সহপাঠীকে অভিযুক্ত করেছেন।
জানা যায়, ৮ জানুয়ারি (বুধবার) কুমুদিনী সরকারি কলেজের পাঁচ ছাত্রী অথৈ মনি, লামিয়া জান্নাত, ঐশি, তন্নী ও অপি ছেলেবন্ধুদের সঙ্গে মধুপুরের সন্তোষপুর রাবার বাগানে ঘুরতে যান। ফেরার পথে অথৈ মনি সহপাঠীদের ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ছেড়ে জাকারিয়া নামক সহপাঠীর মোটরসাইকেলে ওঠেন। শেওড়াপাড়া বাজার এলাকায় একটি ট্রাক্টরের সঙ্গে মোটরসাইকেলের সামান্য ধাক্কায় তিনি রাস্তায় পড়ে গিয়ে মারাত্মক আহত হন।
পরে তাকে মধুপুর হাসপাতাল, টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল হয়ে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে ১৪ জানুয়ারি রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
দুর্ঘটনার পর মধুপুর থানায় কোনো জিডি হয়নি। পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থলে কেউ নিহত না হওয়ায় জিডির প্রয়োজন মনে হয়নি। তবে সংবাদমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ এবং বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহের পর নিহতের মা ১৫ জানুয়ারি টাঙ্গাইল আদালতে ৩০২/১০৯ ধারায় পিটিশন মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে ৯ এপ্রিল মধুপুর থানায় মামলাটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করা হয়।
মামলার আসামিরা হলেন জাকারিয়া (২২), লামিয়া জান্নাত (১৮), আবির (২০) ও সুমাইয়া মোস্তফা অপি (১৮)। অভিযোগকারিণী আলেয়া বেগমের দাবি, তার মেয়েকে ফুঁসলিয়ে বেড়াতে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্ঘটনার পর মোটরসাইকেলের চালক স্থান ত্যাগ করেন। স্থানীয় এক নারী আহত অথৈ মনিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান।
এদিকে কুমুদিনী কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শিক্ষার্থীরা কলেজের অনুমতি ছাড়াই ঘুরতে গিয়েছিল। এজন্য সংশ্লিষ্টদের বহিষ্কার করা হয়েছে এবং প্রাইভেট পড়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
মধুপুর থানার ওসি এমরানুল কবীর জানান, মামলাটি গুরুত্বসহকারে তদন্ত চলছে এবং প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।