জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ উহার সকল অঙ্গ সংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্ত্বা হিসেবে তালিকাভুক্ত করে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আজ বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) সচিব মোঃ জাহাংগীর আলম এ প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেছেন। পরে প্রজ্ঞাপনটি গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।

এর আগে সোমবার (২৯ জুলাই) গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সভায় চলমান ছাত্র আন্দোলনের আড়ালে দেশব্যাপী সংঘাত-সহিংসতায় সম্পৃক্ত থাকার অপরাধে জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে একমত হন নেতারা।

পরদিন মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। আইন মন্ত্রণালয় আইনগত মতামত দেওয়ার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করবে।

অখণ্ড ভারতে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠা হলেও যে পাকিস্তানকে ভিত্তি করে এই দলটি সংগঠিত হয়েছিল, সেই দেশেও একাধিকবার নিষিদ্ধ হয়েছিল ইসলামী দলটি। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের পর পাকিস্তানে অন্তত দুই বার জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। সেই বিবেচনায় স্বাধীন বাংলাদেশে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি করাটাই একটি বিস্ময়কর ব্যাপার।

১৯৫৮ সালে পাকিস্তানের প্রথম সামরিক শাসক হিসেবে আইয়ুব খান ক্ষমতা নেওয়ার পর সব ধর্মীয় রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করেন। তাতে জামায়াতও নিষিদ্ধ হয়েছিল।’

আইয়ুব খানের আমলে প্রণীত মুসলিম পারিবারিক আইনের বিরোধিতা করে পরিস্থিতি নাজুক করার চেষ্টা চালালে ১৯৬৪ সালে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হয়।

নিষিদ্ধের আদেশে বলা হয়েছিল, জামায়াত ও দলটির নেতারা রাষ্ট্রীয় সংহতি ও ঐক্য বিনষ্টের কাজে সক্রিয় ছিলেন। রাষ্ট্রের শত্রুদের কাছ থেকে দলটির অর্থ নেওয়ার প্রমাণও রয়েছে।

একাত্তরে বাংলাদেেশর স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় জামায়াত। শুধু তাই নয়, বাঙালি হত্যাযজ্ঞে পাকিস্তানিদের সহায়তার ভূমিকাও নিয়েছিল দলটি। বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডে জামায়াতের প্রত্যক্ষ ভূমিকার বিষয়টিও আলোচিত।’

স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু সরকার ধর্মীয় সব দল নিষিদ্ধ করলে জামায়াতও সেই কাতারে পরে নিষিদ্ধ হয়। তবে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশের যে উল্টোযাত্রা শুরু হয়, তাতে পুনর্বাসিত হয় জামায়াত।

জিয়াউর রহমানের আমলে জামায়াত সক্রিয় হয়ে ওঠার পর এইচ এম এরশাদের আমলে দলটি সংসদেও আসন নেয়। এরপর ২০০১ সালে খালেদা জিয়ার সরকারে মন্ত্রীও করা হয় দলটির দুই নেতাকে, তাদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দেওয়াকে একাত্তরের লাখো শহীদের প্রতি ‘চপেটাঘাত’ বলে পরে মন্তব্য এসেছিল একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের মামলার এক রায়ে। ওই দুজন পরে যুদ্ধাপরাধে দোষি সাব্যস্ত হয়ে ফাঁসিতে ঝুলেছেন।’

Facebook
Twitter
WhatsApp
Pinterest
Telegram

এই খবরও একই রকমের

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা আজহারকে আপিল করার অনুমতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে আপিল করার অনুমতি দিলেন আপিল বিভাগ। রিভিউ থেকে ফের আপিল শুনানি হবে এমন মানবতাবিরোধী অপরাধের

১৫ দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে শাহবাগ ছাড়ল আন্দোলনকারীরা

ডেস্ক রিপোর্ট: দাবি বাস্তবায়নের জন্য ১৫ দিনের আল্টিমেটামে শাহবাগ ত্যাগ করেছেন বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের আউটসোর্সিং কর্মীরা। শনিবার (১৯ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে চারটায় বাংলাদেশ স্বাধীনতা আউটসোর্সিং

রোববার থেকে খুলছে স্কুল, বন্ধ থাকবে প্রাক-প্রাথমিক

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলমান তাপদাহের মধ্যে রোববার (২৮ এপ্রিল) থেকে খুলছে সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। তবে বন্ধ থাকবে সব প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনার

যে স্ট্যাটাসের কারণে হত্যা করা হয় আবরার ফাহাদকে

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন চুক্তির সমালোচনা করে ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাসের জেরে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ২০১৯ সালের ৬

‘চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে মরিয়া বিএনপি’

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি তার কূটনৈতিক সম্পর্কের নতুন মেরুকরণ করার চেষ্টা করছে। একদিকে ভারত বিরোধিতা, অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর অভিমান, পাশাপাশি চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে এই