জহুরুল ইসলাম, স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, বিএনপির ৩১ দফা রাষ্ট্র সংস্কারের একটি অনন্য দলিল- জাতীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ইতিকথা। ৩১ দফায় ফ্যাসিবাদ বিরোধী সব ব্যবস্থার কথাই বলা আছে। আজ যারা সংস্কার সংস্কার বলে নির্বাচনকে বিলম্বিত করার পায়তারা করছেন তারা জনস্বার্থের কথা ভুলে বসে আছেন। দেশের মানুষের স্বার্থে- জাতীয় স্বার্থে অবিলম্বে জাতীয় নির্বাচন দিন। রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকালে টাঙ্গাইলে শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে জেলা বিএনপি আয়োজিত গণসংবর্ধনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দুই মাসের আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হয় নাই। বিএনপি সহ সমমনা দলগুলো দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে শেখ হাসিনার পতনের আন্দোলন চালিয়েছে। শেষের দিকে এসে আন্দোলনে শরিক হলেই সব কৃতিত্ব তাদের হয়ে যাবেনা। দীর্ঘ সময়ের আন্দোলন-সংগ্রামে বিএনপি ও সমমনা দলের অসংখ্য নেতাকর্মী গুম, খুন, হামলা, মামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে।
বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদের পতনের পরে বিভিন্ন এলাকায় একটি শ্রেণি দখল-চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়েছে। আপনারা কেউ দখল-চাঁদাবাজি সহ কোন প্রকার অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়াবেন না। দখলবাজ, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িতরা বিএনপির কেউনা- এ কথাটা মনে গেঁথে নিন। গণমানুষের কাছে যান- তাদরকে সত্য ও সুন্দরের পথে থাকার আহ্বান জানিয়ে আগামী নির্বাচনে ধানের শীষে ভোট প্রার্থণা করুন।
সংবর্ধিত অতিথি সদ্য কারামুক্ত বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নেতা ও সাবেক উপমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম পিটু বলেন, অসংখ্য মানুষের দোয়া ও মহান আল্লাহর রহমতে ফাঁসির রশি থেকে আমি মুক্তি পেয়েছি। দীর্ঘ ১৭ বছর আমি কারা নির্যাতন ভোগ করেছি। স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকার আমাকে ২৫ দিন রিমান্ডে নিয়ে অমানবিক-বর্ণনাতীত অত্যাচার নির্যাতন চালিয়েছে।
টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম পিটু আরও বলেন, অন্ধকার জেলের কনডম সেলেও আমার উপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। নির্যাতনে অসুস্থ্য হয়ে অর্ধমৃত অবস্থায় আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আমি পাঁচ মাস ছিলাম। সেখানে আমি দেখেছি- কাউকে কাউকে ড্রিল মশিন দিয়ে হাঁটু ছিদ্র করে দেওয়া হচ্ছে। পাশের অনেক অসুস্থ্য মানুষ নির্যাতনে মৃত্যুবরণ করেছে। দীর্ঘ ১৭ বছরে পরিবারের সঙ্গে আমাকে দেখা করতেও দেওয়া হয়নি।
এরআগে বিভিন্ন উপজেলা ও পৌরসভা থেকে মিছিল নিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা সংবর্ধনাস্থল এসে সমবেত হন। এক পর্যায়ে শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে সংবর্ধনানুষ্ঠান বিশাল জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীনের সভাপতিত্বে ওই সংবর্ধনা সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সাবেক মন্ত্রী নুর মোহাম্মদ খান, টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হামিদুল হক মোহন, বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ওবায়দুল হক নাসির প্রমুখ।
গণসংবর্ধনানুষ্ঠান পরিচালনা করেন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবাল।