
নিজস্ব প্রতিবেদক: যুগপৎ আন্দোলনের মিত্র রাজনৈতিক দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। জনগণের ভোটে বিজয়ী হলে এসব দলকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠনের পরিকল্পনাও রয়েছে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের। এর অংশ হিসেবে আজ শুক্রবার ও আগামীকাল শনিবার মিত্র দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, আলোচনার মাধ্যমে মিত্রদের মধ্যে আসন বণ্টন হবে। তবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে নির্বাচনী সমীকরণে রাখার পরিকল্পনা আপাতত নেই। বরং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)সহ বেশ কয়েকটি ইসলামপন্থি ও বামপন্থি দলকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি বিবেচনা করছে বিএনপি।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী জানান, যুগপৎ আন্দোলনের মিত্রদের নিয়েই তারা নির্বাচনে অংশ নেবেন এবং ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফার ভিত্তিতে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। আসন ভাগাভাগির বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমেই নির্ধারণ হবে।
গত ৫ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রমজানের আগে আয়োজনের ঘোষণা দেন। এর পরপরই নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে প্রস্তুতি নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এতে নির্বাচন আয়োজন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনের অনিশ্চয়তা অনেকটাই কেটে গেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আওয়ামী লীগবিহীন নির্বাচনী প্রেক্ষাপটে অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট হলে বিএনপি বড় ব্যবধানে জয়ী হতে পারে। তবে তখন প্রধান বিরোধী দল কোনটি হবে, তা নির্ভর করবে ভোটারদের রায়ের ওপর।
বিএনপি ইতোমধ্যে আসনভিত্তিক দুই দফা জরিপ সম্পন্ন করেছে, যেখানে নিজেদের প্রার্থীর পাশাপাশি মিত্র দলের প্রার্থীদের জনপ্রিয়তাও যাচাই করা হয়েছে। তবে দলীয় নেতারা মনে করছেন, বিএনপির ঘাঁটিতে মিত্রদের জয়ের সম্ভাবনা তুলনামূলকভাবে কম, ফলে আসন ছেড়ে দিলে চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে।
আজ শুক্রবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ১২-দলীয় জোট ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন তারেক রহমান, যেখানে তিনি ভার্চুয়ালি যোগ দেবেন। আগামীকাল শনিবার গণতন্ত্র মঞ্চসহ অন্যান্য মিত্র দলের সঙ্গে বৈঠক হবে।
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না জানান, নির্বাচনের পর সবাইকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব ইতিবাচক মনে করেছেন তারা। ১২-দলীয় জোটের মুখপাত্র শাহাদাত হোসেন সেলিম জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির পরীক্ষিত মিত্র এবং নির্বাচন ঘিরে নিজেদের এলাকায় জনমত তৈরির কাজ শুরু করেছেন।
এ বৈঠকগুলোকে বিএনপি নির্বাচনী কৌশলের গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে দেখছে, যার মাধ্যমে মিত্রদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনী পথচলা নিশ্চিত করতে চায় দলটি।