
নিউজ ডেস্ক: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে ও কীভাবে অনুষ্ঠিত হবে, তা নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা না এলেও নির্বাচনী প্রস্তুতিতে পিছিয়ে নেই দেশের ইসলামী দলগুলো। তারা একটি বৃহৎ ইসলামী ঐক্য গঠনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ইতোমধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম, নেজামে ইসলাম পার্টি ও খেলাফত মজলিস—এই পাঁচটি ইসলামপন্থী দল এক বাক্সে ভোট পাঠানোর লক্ষ্যে ঐক্যমত্যে পৌঁছেছে। এই ঐক্যে আরও কয়েকটি দলকে যুক্ত করার চেষ্টাও চলছে।
জানা গেছে, বড় জোট গড়ে বিএনপির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা কিংবা সমঝোতার মাধ্যমে বিএনপির কাছ থেকে কিছু আসনে ছাড় পাওয়া—এই দুটি লক্ষ্য নিয়েই এগোচ্ছে ইসলামী দলগুলো। সম্প্রতি রাজধানীর পল্টনে ইসলামী আন্দোলনের কার্যালয়ে পাঁচ সমমনা ইসলামী দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, সমমনা পাঁচ দল এক বাক্সে ভোট পাঠাতে একমত হয়েছে।
সংলাপে নিবন্ধিত অপর দুই ইসলামপন্থী দল—ইসলামী ঐক্যজোট ও খেলাফত আন্দোলন—কেও এই ঐক্যে যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে সূত্র জানায়, গত ৭ জানুয়ারির ‘ডামি নির্বাচনে’ অংশ নেওয়ার কারণে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আব্দুল হাসনাত আমিনী ও মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহকে এই ঐক্য থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
হেফাজতে ইসলাম ঘনিষ্ঠ কওমি মাদ্রাসা-ভিত্তিক দলগুলোও ৫ আগস্টের পর থেকে বলছে, আগামীর নির্বাচনে ইসলামী ভোট একত্রিত করাই হবে তাদের প্রধান লক্ষ্য।
গত ১৭ এপ্রিল খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম ও নেজামে ইসলাম পার্টির মধ্যে একটি বৈঠকে এই লক্ষ্যের কথা পুনর্ব্যক্ত করা হয়। পরে তাদের সঙ্গে যুক্ত হয় চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
দীর্ঘদিনের আদর্শিক বিরোধ সত্ত্বেও গত ২১ জানুয়ারি জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের আমির শফিকুর রহমান এবং ইসলামী আন্দোলনের আমির রেজাউল করিমের মধ্যে সাক্ষাৎ হয়।
বিএনপির একাধিক নেতা এই ঐক্যকে ‘স্বাধীনতা বিরোধীদের মিলন’ ও ‘ফ্যাসিবাদের সহযোগী’ বলে আখ্যায়িত করে কটাক্ষ করেন। তবে এর পাঁচদিন পর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চরমোনাই পীরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পরে ন্যূনতম সংস্কার শেষে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিসহ ১০ দফা দাবিতে দল দুটি একমত হয়ে একটি ঘোষণাপত্রে সই করে।
গত ২৯ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত খেলাফতের সম্মেলনে অংশ নিয়ে জামায়াতের আমির ঘোষণা দেন, “ইসলামী দলগুলোর মাথায় আর কেউ কাঁঠাল ভেঙে খেতে পারবে না।”
বর্তমানে ১২ দলীয় জোটের নেতারাও জামায়াতের সঙ্গে বৈঠক করছেন এবং প্রায় সব ইস্যুতেই বিএনপির পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন। নির্বাচন সামনে রেখে ইসলামী দলগুলোর এ ধরনের একতাবদ্ধ অবস্থান আগাম রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।’