গণমাধ্যম মালিক এবং সাংবাদিকদের কাছে গণমাধ্যম সপ্তাহটির গুরুত্ব অনেক। এটির গুরুত্ব এবং প্রয়োজনীয়তা কেবল উপলব্ধির বিষয়। অনেকে না জানার ফলে গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারছেন না। প্রকৃতপক্ষে আমরা গণমাধ্যমের বৃহৎ এ অঙ্গনটির পরিধিও নিরূপণ করতে পারিনা। এ অজ্ঞতার ফলে অনেক সময় আমরা তালগোল পাকিয়ে ফেলে দেই। সমুদ্রসম গণমাধ্যম শিল্পটির সাথে এখন অনলাইন ভিত্তিক মিডিয়া এবং ইউটিউব যুক্ত হয়েছে। কখনো আমরা অনলাইন মিডিয়া গুলোকে আক্রমন চালিয়ে আবার ইউটিউব গুলোকে বিজিত করতে নানামুখী বিতর্কে জড়িয়ে যাই। বিশাল এ অঙ্গনটির কর্মপরিধির আওতা ঢেলে সাজাতে প্রতিবছর সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজনে পার্থক্য নিরূপণে সহযোগী হতে পারে।
গণমাধ্যম এবং সাংবাদিকতার এ অঙ্গন নিয়ে যেমন গবেষণার বিষয় রয়েছে তেমনি প্রচুর জ্ঞান ভান্ডার থাকা উচিত। কিন্তু তার অনেক কিছুই নেই অনেকের অথচ বনে গেছেন সম্পাদক এবং সাংবাদিক। আমরা নিশ্চয়ই জানি দেশে নানাবিধ সপ্তাহ - দিবস রয়েছে। যা খোদ রাষ্ট্র উদযাপন করে সরকারি ব্যবস্থাপনায়। কিন্তু রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে পরিচিত গণমাধ্যম তাদের জন্য নেই কোন আয়োজন; যা দূ:খজনক। কিন্তু থাকবেই বা কি করে কেউ কি কখনো দাবি করেছেন? করেননি!
আপনারা অবশ্যই জানেন, দেশে শিক্ষা সপ্তাহ, স্বাস্থ্য সপ্তাহ, কৃষি সপ্তাহ, মৎস্য সপ্তাহ, পুলিশ সপ্তাহ, আনসার সপ্তাহ, বিজিবি সপ্তাহ, চিকিৎসা সপ্তাহ,পুষ্টি সপ্তাহ, নৌ সপ্তাহসহ অগণিত দিবস রয়েছে। সে সকল সপ্তাহ এবং দিবস যা রাষ্ট্রীয় ভাবে উদযাপন করা হয়ে থাকে। কিন্তু, সাংবাদিকদের একটি মাত্র দিবস ৩রা মে তা কিন্তু রাষ্ট্রীয় ভাবে উদযাপিত হয়না। গণমাধ্যম এবং সাংবাদিকরা সবসময়ই রাষ্ট্রের দ্বারা অবহেলিত, নিষ্পেষিত, সুষম সুবিধা বঞ্চিত। আমরা কাজ করতে চাই রাষ্ট্রের পক্ষে দায়িত্বশীলতার সাথে যেখানে হারিয়ে গেছে এই পেশার ঐতিহ্য, সম্মান এবং মর্যাদা।
বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিকফোরাম-বিএমএসএফ দেশের গণমাধ্যম এবং সাংবাদিকদের কথা চিন্তা করে ২০১৭ সাল থেকে ১-৭ মে জাতীয় গণমাধ্যম সপ্তাহ নামে প্রথম বারের মত এ সপ্তাহটি উদযাপন শুরু করে। তারই ধারাবাহিকতায় এ বছর ৯ম বারের মত সারাদেশে উদযাপিত হবে, ইনশাআল্লাহ। এবারের আয়োজনটি সকল সাংবাদিক এবং সকল গণমাধ্যমের জন্য।
জাতীয় গণমাধ্যম সপ্তাহ -২০২৫, ইতিমধ্যে সাংবাদিকদের এ সপ্তাহটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে পরিনত হয়েছে। সপ্তাহটিকে ঘিরে এবারে আগের বছর গুলোর তুলনায় আরও বেশি কর্মসূচীর মাধ্যমে ঝাঁকজমক এবং গুরুত্ববহ করে তুলতে চায় বিএমএসএফ। সেক্ষেত্রে এবার বিএমএসএফ তার নিজস্ব গন্ডি পেরিয়ে প্রেস ক্লাবসহ যে কোনো সাংবাদিক সংগঠনের সমন্বয়, সহযোগিতা কামনা করেছেন।
সপ্তাহটিকে ঘিরে বিগত বছর গুলোতে যে সকল কর্মসূচী ছিলো তা হলো; সপ্তাহটির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে শাখা কমিটি এবং সাংবাদিকদের সদস্যদের অংশগ্রহণে প্রতিবছর ১৫ এপ্রিল জেলা প্রশাসক বা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে তথ্য মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি পাঠানো।
সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচীর মধ্যে লিফলেট বিতরণসহ
রেলী, ২ মে সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগীতা, ৩ মে. বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে সাংবাদিকতার নীতি নৈতিকতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা, ৪ মে পেশাগত দায়িত্ব পালনে সাংবাদিকদের সমস্যা চিহ্নিত করতে মিটি দ্যা প্রেস, ৫ মে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে আন্ত: যোগাযোগ বৃদ্ধি, সোর্সদের সাথে পারস্পরিক যোগাযোগ।
জাতীয় গণমাধ্যম সপ্তাহের এ সকল কর্মসূচীর মাধ্যমে গণমাধ্যম এবং সাংবাদিক মাঝে অনৈক্য ঘুচিয়ে ঐক্য প্রক্রিয়া সুদৃঢ় হবে। এই মূহুর্তে যেটি সবচেয়ে বেশি জরুরী সেটি হচ্ছে পেশার অনৈক্য ঘুচিয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান। আমরা আশাবাদী দেশে দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা গড়ে তুলতে জাতীয় গণমাধ্যম সপ্তাহ অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারবে।
লেখক: আহমেদ আবু জাফর, চেয়ারম্যান, ট্রাস্টি বোর্ড, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম, ১৬ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রী: