
ডেস্ক রিপোর্ট: জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সঙ্গে সব ধরনের সহযোগিতা স্থগিত করেছে ইরান। দেশটির পার্লামেন্ট বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত একটি আইন পাস করেছে বলে জানিয়েছে তাসনিম নিউজ।
ইরানের অভিযোগ, এই সংস্থা তেহরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক অবকাঠামোর বিরুদ্ধে অবৈধ ইসরায়েলি শাসন ও তাদের পশ্চিমা মিত্রদের শত্রুতা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছে।
এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া এক পোস্টে ইরানের পার্লামেন্টের স্পিকার মোহাম্মদ বাকের কালিবাফ বলেন, এই আইনের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন ও কার্যকরকরণ হয়েছে। আজ সাংবিধানিক পরিষদের অনুমোদনের পর আইএইএর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিতের আইনটি আনুষ্ঠানিকভাবে বাস্তবায়িত হলো।
তিনি আরও বলেন, যতক্ষণ না আমাদের পরমাণু কেন্দ্রগুলো এবং বিজ্ঞানীদের নিরাপত্তা পুরোপুরি নিশ্চিত হচ্ছে ততক্ষণ এই সংস্থার সঙ্গে কার্যক্রম চালানো অসম্ভব। তারা যুদ্ধ ও আগ্রাসনের সহায়তাকারী হিসেবে কাজ করছে এবং অবৈধ জায়নিস্ট শাসনের অমানবিক স্বার্থ বাস্তবায়ন করছে।
এই আইনটি পার্লামেন্টে উপস্থিত ২২১ জন আইনপ্রণেতার সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়। এতে বলা হয়েছে, আইনটি কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সরকারের প্রতি নির্দেশ থাকবে যাতে তারা পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি ও এর আওতাধীন নিরাপত্তা নির্দেশনা অনুযায়ী আইএইএর সঙ্গে সব ধরনের সহযোগিতা তাৎক্ষণিকভাবে স্থগিত করে।
আইনে উল্লেখ রয়েছে, সহযোগিতা তখনই পুনরায় শুরু করা যাবে, যখন জাতিসংঘ সনদের আলোকে এবং ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইরানের পরমাণু কেন্দ্র ও বিজ্ঞানীদের পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
এছাড়া, চুক্তির অনুচ্ছেদ ৪ অনুযায়ী ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণের অধিকার সম্পূর্ণভাবে স্বীকৃত ও সম্মানিত না হওয়া পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ বলবৎ থাকবে।
এই শর্তগুলো পূরণ হয়েছে কিনা, তা নির্ধারণ করবে ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থা এবং এর চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ।
আইন অনুযায়ী প্রতি তিন মাস অন্তর সরকারের পক্ষ থেকে পার্লামেন্ট ও নিরাপত্তা পরিষদে একটি অগ্রগতির প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।
আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে একটি অতিরিক্ত ধারা যুক্ত করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে— কেউ যদি এই আইন বাস্তবায়নে বাধা দেয় বা ব্যর্থ করে, তাহলে তাকে ইসলামি দণ্ডবিধির ১৯ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অপরাধী হিসেবে গণ্য করা হবে এবং শাস্তির ষষ্ঠ স্তরের আওতায় সাজা পেতে হবে।’