
নজরুল ইসলাম: সম্পর্কের জেড়ে সুকৌশলে চাচার কাছ থেকে জমির মূল্য পরিশোধ না করে গোপনে দলিল রেজিস্ট্রি করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ভাতিজার বিরুদ্ধে। গ্রাম্য সালিশী ও প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না ভুক্তভোগী।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা বহুলী ইউনিয়নের ব্রক্ষ্মখোলা গ্রামের মৃত আজিজল হকের পুত্র আব্দুর রাজ্জাক ও মো. আবু কালামের পুত্র বাদশা শেখের সাথে এ ঘটনা ঘটেছে। বংশসূত্রে তাঁরা চাচা ভাতিজার সম্পর্ক।
জানা যায়, ২০২৪সালে অর্থের বিশেষ প্রয়োজন হওয়ায় আব্দুর রাজ্জাক আর এস খতিয়ান ২৪৩, ৬৫৪ দাগের ১৩ ডেসিম্যাল জমির ওয়ারিশসূত্রে হিস্যা অনুযায়ী ৪০হাজার দাম ধরে সাড়ে ২ডে.মি জায়গা মোট ৯০হাজার টাকা নির্ধারন করে একই গ্রামের ভাতিজা বাদশা শেখের নিকট বিক্রী করার সিদ্ধান্ত হয়। বাদশা সেই খতিয়ান, দাগে জমি ক্রয় ও দলিল লেখনি না করে ২০২৪সালেে ২২ অক্টোবর ৮২০২/২৪ নং বিক্রয় দলিল মূলে ৩৬৪ আর এস খতিয়ানের ৬১৯ দাগের ৬২ শতক ভূমি কাতে পশ্চিমাংশে ৪৮ শতকের কাতে দক্ষিনাংশের ২৪ শতকের পূর্বাংশে ৫শতক জমি তিন লাখ টাকা দাম ধরে বাড়ী এসে টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জেলা কর্মকর্তার সামনে সব বুঝিয়ে পাওয়ার কথা বলে রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করে নেন। ওইদিন রাজ্জাক বাড়ী এসে বাদশার কাছে টাকা চাওয়ায় বিভিন্ন সময় টাকা প্রদানে টালবাহানা করতে থাকে বাদশা। লোকজনের জানাজানির এক পর্যায়ে রাজ্জাক সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পরে পুলিশী তদন্তে বারবার বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিলেও বাদশা অনুপস্থিত থাকেন। গ্রাম্য শালিসী বৈঠকে উপস্থিত ব্যক্তিদের নিকট টাকা না দিয়ে গোপনে রেজিস্ট্রি করার বিষয়টি সত্যতা উঠে আসে। এক পর্যায়ে ওই বৈঠকে রাজ্জাকের ভাগিনা হাবিবকে টাকা প্রদানের কথা বলা হলেও তাঁকে উপস্থিত করে টাকা না দেওয়ার ব্যাপারে আবারো প্রমানিত হয়। সদর থানার এস আই মানিক ও বারেক ওই শালিসী বৈঠকে টাকা না দেবার বিষয়টি প্রমাণ পেয়ে দ্রুত নিজেদের মধ্যে মিমাংসা করার জন্য সকলকে অনুরোধ করেন।
আরও জানা যায়, এর আগে চাচাতো ভাই মৃত আব্দুস ছালাম সেখের পুত্র মাসুদের সাথে একই ঘটনা ঘটেছে। ২০২৪ সালের ৮ এপ্রিল ৩১১৮নং দলিল মূলে আর এস খতিয়ান ৬১১, ৬১৯, ৭০৮ ও ২৪৩নং খতিয়ান থেকে. ০৩৯০ শতক জমি দুই লাখ দশ হাজার টাকায় ক্রয় করেন আবু কালামের পুত্র বাদশা। রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে স্বাক্ষর নেবার পর বাদশার ভাইয়ের নিকট টাকা রয়েছে বলে সেই টাকা উপস্থিত সকল কার্যক্রম শেষ করে দেওয়ার চুক্তি শেষ পরে নানান টালবাহানা ও টাকা প্রদানে কালক্ষেপন করতে থাকে। পরে বাড়ীতে গিয়ে টাকা দেওয়ার নিশ্চয়তা দিয়ে বাড়ীতে পাঠিয়ে দেন বাদশা। এভাবে মাসুদের টাকা পরিশোধের সমযসীমা পার হওয়ায় এলাকায় জানাজানি হয়। একপর্যায়ে গ্রাম্য সালিশে বৈঠক বসে সত্যতা প্রমান পেয়ে রেজিস্ট্রি খরচ বাবদ ১লাখ ৪৮হাজার টাকা মাসুদের নিকট থেকে বাদশা টাকা নিয়ে জমি ফেরত দিতে বাধ্য হন। এভাবে বাদশার প্রতারণার ফাঁদে অনেকেই নিঃস্ব হয়েছে। বাদশার এই অভিনব কৌঁসল দ্রুত বন্ধ করে প্রশাসনের নিকট জোড়ালো শাস্তি কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ সদর থানার সাব-ইন্সপেক্টর ( এসআই ) মানিক বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর বাদশাকে উপস্থিত করা যায়নি। পরে গ্রাম্য শালিসী উপস্থিতির মাধ্যমে ভুক্তভোগী আব্দুর রাজ্জাককে কৌঁসলে বাড়ি ফিরে টাকার দেবার কথা বলে আর টাকা দেননি এবিষয়ে জানার পর বৈঠকে সকলের সামনে টাকা প্রদানে স্বীকার করেন। কিন্তুু রেজিস্ট্র অফিসে টাকা দিছে কি দেইনি সেটি আমরা বলতে পারবো না।
বহুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন বলেন, ভুক্তভোগী আব্দুর রাজ্জাক মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ দেবার পর দ্রুত মিমাংসার করার জন্য গ্রাম্য মাতব্বর নিয়ে বসলেও মানছেন না বাদশা শেখ। টাকা না দেবার বিষয়টি দুজন সরকারি কর্মকর্তা ও বৈঠকে উপস্থিত ব্যক্তিবর্গের সামনে স্বীকার করলেও কাউকে কর্নপাত করছেন না। এই বিষয় ছাড়াও এখন তাঁর বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ শুনছি।