
অনলাইন ডেস্ক: গত কোরবানির ঈদে ১৫ লাখ টাকা দাম হাঁকানো এক ছাগল নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় হয়েছিল। ওইছাগল সাবেক রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমান সাজানো হাজার কোটি টাকার বাগান এলোমেলো করে দিয়েছে। যাকে নিয়ে এই ছাগলকাণ্ড, সেই ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাত এই ঘটনার পর দুই দফা আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে জানা গেছে। এদিকে আলোচিত এই ছাগলথেকে খোদ ‘সাদিক এগ্রো’ নামের সেই খামারিও রেহাই পাননি।’
এক বছর আগের ছাগলকাণ্ডের ঘটনার শুরু একটি ভিডিওর মাধ্যমে। সাদিক অ্যাগ্রো ফার্মের মালিক মোহাম্মদ ইমরান হোসাইন ব্রিটল জাতের ছাগল বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই ছাগলটির ছবি ভাইরাল করেন। বর্তমানে ইমরান হোসেন জেল হাজতে আছেন।
এদিকে ১৫ লাখ টাকায় ওই ছাগল কিনে নেন এনবিআরের তৎকালীন কর্মকর্তা মতিউর রহমানের ছেলে মুশফিকুর। ছাগলটি কেনার পর একটি সেলফি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন তিনি। সে সময় অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে, একজন সরকারি কর্মকর্তার ছেলে এতো টাকা দিয়ে কীভাবে ছাগল কেনে। এরপর আবার খোদ মতিউর দাবি করেন, মুশফিকুর তার ছেলে নয়।
সে সময় ছাগলটির দাম ১৫ লাখ টাকা চাওয়ার পেছনে খামারের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছিল, ‘উন্নত জাত ও উচ্চ বংশীয় মর্যাদাসম্পন্ন ছাগল এটি।’ বিদেশি ব্রিটল জাতের ছাগল বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারও করা হচ্ছিল।
এদিকে অনুসন্ধানে মতিউরের আরেক বিয়ের তথ্য বেরিয়ে আসে। সেই সঙ্গে দুদক খুঁজতে থাকে তার আয়ের উৎস। তবে মুশফিকুর ছাগলটি কিনলেও সেটি নেননি। সেটি রয়ে যায় সাদিক অ্যাগ্রোর মোহাম্মদপুরের খামারে। এদিকে খামারটি সরকারি জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে জানিয়ে ২০২৪ সালের জুনে সেটি ভেঙে দেওয়া হয়।
এ সময় খামারের গরু-ছাগল সরিয়ে নেওয়া হয় সাভারের নিজেদের আরেকটি খামারে। ওই দিনই আরেকবার দেখা গিয়েছিল আলোচিত সেই ছাগলটিকে।
সম্প্রতি খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখনও অবিক্রিত রয়ে গেছে ৬২ ইঞ্চি উচ্চতার ওই ছাগলটি। এত বিশাল আকৃতির ছাগল সাধারণত দেশে সচরাচর দেখা যায় না। গত বছর ঈদের সময় ওই ছাগলের ওজন ছিল প্রায় ১৭৫ কেজি। বর্তমানে খামারের লোকজন জানিয়েছেন, এখন ওই আলোচিত ছাগলের ওজন কিছুটা কমেছে।
সাদিক এগ্রোর একজন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, ছাগলটি খামারেই আছে। বিক্রি না করে তারা এটি দরিদ্রদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়ার চিন্তা করছেন তারা।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন শেখ হাসিনা। জানুয়ারিতে দুদক অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে মতিউর ও তার প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ, তাদের ছেলে তৌফিকুর রহমান ও মেয়ে ফারজানা রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করে। এরপর ১৫ জানুয়ারি গ্রেপ্তার হন মতিউর ও তার স্ত্রী লায়লা।’