
নিজস্ব প্রতিবেদক: শিশুখাদ্যের বাজারে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি অভিভাবকদের উদ্বেগ বাড়িয়েছে। মাত্র ছয় মাসের ব্যবধানে গুঁড়া দুধ ‘কাউ অ্যান্ড গেট’ ও হরলিক্সসহ বিভিন্ন শিশুখাদ্যের কৌটাপ্রতি দাম বেড়েছে ১৪০ থেকে ৮০০ টাকা। এতে বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের জন্য শিশুদের পুষ্টি নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, হরলিক্সের ৫০০ গ্রাম এখন বিক্রি হচ্ছে ৬৪০ টাকায়, যা গত নভেম্বরেও ছিল ৫০০ টাকা। লেকটোজেনের কৌটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার টাকা, নিডো থ্রি প্লাস ৪ হাজার ৬০০ থেকে বেড়ে ৫ হাজার ৩০০, সেরিলাক ফ্রুটস অ্যান্ড হানি ১ হাজার ৯৫০ থেকে বেড়ে ২ হাজার ১০০, নিডো ওয়ান প্লাস ৫ হাজার ১০০ এবং আপটামিল ওয়ান বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৩০০ টাকায়। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে কাউ অ্যান্ড গেটের দাম—কৌটাপ্রতি ৮০০ টাকা।
গুলশান ডিএনসিসি মার্কেটের পাইকারি বিক্রেতারা জানান, শিশুখাদ্যের বাজার মূলত বহুজাতিক কোম্পানির দখলে। আমদানিকারকরা দাম নির্ধারণ করায় বাজারে তার প্রভাব পড়ে।
ঢাকার মহাখালীর বাসিন্দা নাজমুল হোসেন বলেন, “স্বল্প আয়ে সংসার চালানোই কঠিন। এখন শিশুখাদ্যের বাড়তি খরচ সামলাতে মাসের শেষ দিকে ঋণ করা বাধ্যতামূলক হয়ে গেছে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. আবু তোরাব মো. আবদুর রহিম মনে করেন, এই মূল্যবৃদ্ধি নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারে ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে। এতে শুধু শিশুরাই নয়, পরিবারের অন্যান্য সদস্যও পুষ্টিহীনতার শিকার হচ্ছে। এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব সামাজিক অস্থিরতাও বাড়াতে পারে।
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, সরকারের বাজার নিয়ন্ত্রণের সদিচ্ছা নিয়েই প্রশ্ন আছে। আইনের প্রয়োগ না হওয়ায় ব্যবসায়ীরা বছরের পর বছর দাম বাড়াচ্ছে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক আবদুল জলিল জানান, সরকার নির্ধারিত মূল্য অতিক্রম করলে ব্যবসায়ীদের শাস্তির আওতায় আনা হয়। তবে আমদানিকৃত পণ্যের মূল্য নির্ধারণে আইনগত সীমাবদ্ধতা থাকায় কার্যকর ব্যবস্থা নিতে বাধা তৈরি হয়।











