নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে (এনবিএফআই) খেলাপি ঋণের পরিমাণ ক্রমেই বাড়ছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২ হাজার ৪৬২ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জুন শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মোট ঋণের স্থিতি দাঁড়ায় ৭৭ হাজার ৯২ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ হয়েছে ২৭ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণকৃত ঋণের ৩৫ দশমিক ৭২ শতাংশ। গত বছরের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২৫ হাজার ৭৯ কোটি টাকা, যা ছিল মোট ঋণের ৩৩ দশমিক ২৫ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ৩৫টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এর মধ্যে ২০টি প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের হার ৫০ থেকে ৯৯ শতাংশ। এর মধ্যে ৯টি প্রতিষ্ঠানের কর্মপরিকল্পনা অসন্তোষজনক হওয়ায় অবসায়নের (লিকুইডেশন) উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এগুলো হলো—এফএএস ফাইন্যান্স, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি, পিপলস লিজিং, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, আভিভা ফাইন্যান্স, প্রিমিয়ার লিজিং, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, জিএসপি ফাইন্যান্স ও প্রাইম ফাইন্যান্স।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র মো. শাহরিয়ার সিদ্দিকী জানিয়েছেন, আমানতকারীদের স্বার্থরক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে প্রক্রিয়াটি এখনো পর্যালোচনায় রয়েছে এবং সরকারের অনুমোদন ও অর্থ ছাড়ের পর কার্যক্রম শুরু হবে।
এ ছাড়া ঝুঁকির মধ্যে থাকা আরও ১১টি প্রতিষ্ঠান হলো—সিভিসি ফাইন্যান্স, বে লিজিং, ইসলামিক ফাইন্যান্স, মেরিডিয়ান ফাইন্যান্স, হাজ ফাইন্যান্স, ন্যাশনাল ফাইন্যান্স, আইআইডিএফসি, উত্তরা ফাইন্যান্স, ফিনিক্স ফাইন্যান্স, ফার্স্ট ফাইন্যান্স ও ইউনিয়ন ক্যাপিটাল। এসব প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের হার ৫০ শতাংশের বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করছে, দীর্ঘদিনের অনিয়ম ও দুর্বল তদারকির কারণে এ খাতে খেলাপি ঋণের চাপ বেড়েছে। ফলে গ্রাহকদের আস্থা নষ্ট হচ্ছে এবং অনেক আমানতকারী টাকা তুলতে পারছেন না।
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.