
কুমিল্লা দক্ষিণ প্রতিনিধি: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাতিসা ইউনিয়নের পাতড্ডা বাজারে সরকারি খালের জমি দখল করে মার্কেট নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সদস্য আবদুল হাই কানুর বিরুদ্ধে। উপজেলার লুদিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা এই রাজনীতিকের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে খাল দখল, অবৈধ দালান নির্মাণ এবং চাঁদাবাজির অভিযোগ করে আসছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয়দের দাবি, ফেলে দেওয়া সরকারি খালের প্রায় ৩০ শতক জমি জবরদখল করে সেখানে ভবন নির্মাণ করেন আবদুল হাই কানু। নির্মাণকাজে সহযোগিতা করেন তার পুত্র গোলাম মোস্তফা বিপ্লবসহ স্থানীয় একদল যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ কর্মী। খাল ভরাটের কয়েক মাসের মধ্যেই নির্মিত ভবনের প্রায় ৫০টি দোকান থেকে প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা করে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে, যা চাঁদাবাজির শামিল বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।
২০১৬ সালের ২ সেপ্টেম্বর পাতড্ডা বাজারে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে যুবলীগ কর্মী রানাকে হত্যা করার অভিযোগও রয়েছে কানু ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, ওই সময় রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হকের আশীর্বাদেই এসব অপকর্ম করে গড়ে তুলেছিলেন প্রভাবশালী চক্র।
অভিযোগ আছে, প্রতিটি দোকান বরাদ্দ দেওয়ার সময় দুই থেকে চার লাখ টাকা পর্যন্ত অগ্রিম নেওয়া হয়েছে। চাঁদাবাজির এই অর্থে গড়ে উঠেছে কানুর ‘অর্থের পাহাড়’। এলাকাবাসীর দাবি, এ বিষয়ে একাধিকবার উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাকিয়া সরওয়ার লিমা বলেন, “বিষয়টি পূর্বে আমাদের জানা ছিল না। দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
অন্যদিকে, জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, “আমি বিষয়টি আগে জানতাম না। এখনই তদন্তের নির্দেশ দিচ্ছি।”
এলাকাবাসীর অভিযোগ, নতুন সরকারের এক বছর পূর্ণ হলেও এখনও এ ব্যাপারে কোনো দৃশ্যমান প্রতিকার মেলেনি। তারা দ্রুত সরকারি জমি উদ্ধার ও দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।