
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৫৩ বিজিবির এক অভিযানের ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র বিতর্ক ও সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, এক ব্যক্তিকে আটক করতে গিয়ে স্থানীয়দের বাধার সম্মুখীন হন বিজিবি সদস্যরা। উপস্থিতরা আটককৃত ব্যক্তির কাছ থেকে উদ্ধার মালামাল দেখাতে বললেও বিজিবির পক্ষ থেকে তা প্রদর্শন করা হয়নি। বরং এক পর্যায়ে একজন সদস্যকে অস্ত্র তাক করতে এবং পরে ম্যাগাজিন লোড করে স্থানীয়দের দিকে চড়াও হতে দেখা যায়।
বিজিবির পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শুক্রবার (১৫ আগস্ট) বিকালে সদর উপজেলার আলীমনগর ঘাট থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার পূর্বে ৪নং বেড়িবাঁধ এলাকায় অভিযান চালায় বাখেরআলী বিওপির টহল দল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা জানতে পারে, নিকটবর্তী একটি আমবাগানে মাদক সেবন চলছে। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পাঁচটি মোটরসাইকেলের আরোহী পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় মো. সাজিদ আহম্মেদ টুটুল (৩০), পিতা ফজলুর রহমান, গ্রাম রামচন্দ্রপুরকে আটক করা হয়।
বিজিবির দাবি, তার কাছ থেকে ১৫২ বোতল ভারতীয় ফেন্সিডিল, একটি খালি মদের বোতল, কিছু ভারতীয় রুপি, বাংলাদেশি ৪৫ হাজার ৩৩০ টাকা, একটি ওয়ান প্লাস স্মার্টফোন, একটি বাটন মোবাইল এবং পালিয়ে যাওয়া সহযোগীদের ফেলে যাওয়া পাঁচটি মোটরসাইকেল (এপাচি ৪ভি–২টি, হিরো হোন্ডা–২টি, টিভিএস–১টি) জব্দ করা হয়।
বিজিবির অভিযোগ, আটক এড়াতে পালিয়ে যাওয়া সহযোগীরা স্থানীয়দের উস্কে দিয়ে টহলদলের ওপর আক্রমণের চেষ্টা করে। পরে কোম্পানি কমান্ডারের নেতৃত্বে অতিরিক্ত টহল গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আটককৃত যুবক ও জব্দ মালামাল সদর থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, বিজিবি আটককৃতের কাছ থেকে কোনো মাদক উদ্ধার করতে পারেনি এবং মোটরসাইকেলগুলো আসলে বন্যা দেখতে আসা সাধারণ মানুষের। প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবি করেন, গ্রেফতারের সময় টুটুলের কাছে কোনো নিষিদ্ধ দ্রব্য ছিল না। তারা আরও অভিযোগ করেন, স্থানীয়দের প্রশ্নের জবাবে বিজিবি কোনো মালামাল দেখাতে ব্যর্থ হয় এবং পরে অস্ত্র তাক করে ভয় প্রদর্শন ও শারীরিক নির্যাতন চালায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ৫৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়কের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে তার পক্ষ থেকে এক হাবিলদার জানান, “আটককৃতের সহযোগী ও স্থানীয়রা বিজিবির ওপর চড়াও হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কঠোর অবস্থান নিতে হয়।” উদ্ধার মালামাল স্থানীয়দের দেখানো হয়নি কেন— এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “লুট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় সেগুলো দেখানো হয়নি।”
ঘটনাটি ইতোমধ্যে এলাকায় আলোচিত বিষয় হয়ে উঠেছে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।