নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালী সদর উপজেলার এওজবালিয়াতে দু’লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এক নেতার নির্মাণাধীন দোকান ভাংচুুর ও নির্মাণসামগ্রী লুটের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা উপজেলার জমিদারহাট বাজারের ঘটনাস্থল থেকে একজনকে আটক করে সুধারাম থানায় হস্তান্তর করে। এর আগে সোমবার দিবাগত রাত ১টার দিকে ওই নির্মাণাধীন দোকান ঘরে ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
আটককৃত ব্যক্তির নাম জোবায়ের হোসেন নাঈম (২৪)। তিনি স্থানীয় নন্দনপুর গ্রামের ওমর ফারুক মিলনের ছেলে এবং একই এলাকার ছাত্রদল কর্মী।
ভুক্তভোগী ক্বারী আতিক উল্যাহ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশর এওজবালিয়া ইউনিয়নের সভাপতি ও হাজী রহমত উল্যাহ নূরানী তালিমূল কোরআন কওমি মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘স্থানীয় জমিদার হাট বাজারের পশ্চিম পাশে রাইস মিলস্ সংলগ্ন আমার খরিদকৃত দীর্ঘ ৪০ বছরের দখলীয় সম্পত্তিতে সম্প্রতি আমি দোকান ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করি। গত ৫ জানুয়ারি সকালে এওজবালিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মহিন উদ্দিন, ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন লিটন, বিএনপি কর্মী আবদুল গনি বাবু, ওমর ফারুক মিলন, নছির আহমেদ ও ছাত্রদল কর্মী জোবায়ের হোসেন নাঈমের নেতৃত্বে ১০-১৫ জনের সঙ্গবদ্ধ সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে আমার নির্মাণাধীন দোকান ঘরে প্রবেশ করে। এসময় তারা আমার নির্মাণ কাজে বাধা দিয়ে আমার নিকট থেকে ২ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি সন্ত্রাসীদের চাহিত চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমার সম্পত্তিতে কাজ করতে দিবে না মর্মে হুমকি-ধামকি দিয়ে চলে যায়। পরে বিষয়টি স্থানীয়দের জানালে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে পুনরায় আমার কাজ বন্ধ করে দেয় এবং আমিসহ আমার পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এরই সূত্র ধরে সোমবার (২০ জানুয়ারি)। দিবাগত রাত ১ টার দিকে উল্লিখিত সন্ত্রাসীদের নেতৃত্বে সঙ্গবদ্ধ একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমার নির্মাণাধীন দোকান ঘরে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় এবং দোকান ঘরের নির্মাণ সামগ্রী লুট করে নিয়ে যায়। পরে মঙ্গলবার সকালে আমি বিষয়টি সুধারাম মডেল থানা পুলিশ ও নোয়াখালী সেনা ক্যাম্পে জানালে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ঘটনাস্থল থেকে একজনকে আটক করেন।’
স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, গত ৫ই আগস্ট ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকে এই এলাকায় জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির নাম ভাঙিয়ে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মহিন উদ্দিন, যুবদলের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন লিটন ও ওমর ফারুক মিলন গংরা প্রভাব বিস্তার করছে। তারা চাঁদাবাজি, অবৈধভাবে দোকান ঘর দখলের চেষ্টা, স্কুল শিক্ষককে লাঞ্ছিত করাসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করে চলছে। তার বিরুদ্ধে দলীয় হাইকমান্ড সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করলে আগামী দিনে দল ঝুঁকিতে পড়বে। অনতিবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মহিন উদ্দিন ও ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন লিটনের মুঠোফোনে কল করলে তারা ফোন রিসিভ করেননি।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)। মো. কামরুল ইসলাম বলেন, ‘ভুক্তভোগীর অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এসময় ঘটনাস্থল থেকে জোবায়ের হোসেন নাঈম নামের এক যুবককে আটক করা হয়েছে। এই ঘটনায় থানায় মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’