
নিজস্ব প্রতিবেদক: চাঁদা না দেওয়ায় রাজবাড়ী জেলা সদর হাসপাতালে লিফট স্থাপনের কাজ বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তার।
সভায় নির্মাণকাজের অগ্রগতি জানতে চাইলে গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (সিভিল) মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম জানান, লিফট স্থাপনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান একাধিকবার স্থানীয় চাঁদাবাজদের চাঁদা দিতে বাধ্য হয়েছে। তবুও বিভিন্ন গ্রুপ নতুন করে চাঁদা দাবি করছে, হুমকি দিচ্ছে, যার ফলে কাজে বিঘ্ন ঘটছে। তিনি আরও জানান, এর আগে হাসপাতালের এসির তার ও আউটডোরের কিছু মালামাল চুরি হয়েছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র ম্যানেজার আব্দুল্লাহ আল মামুন চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর দেওয়া এক লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, ১৯ জানুয়ারি দুপুরে ৮–১০ জন অস্ত্রধারী ব্যক্তি প্রকল্প এলাকায় প্রবেশ করে চাঁদা দাবি করে এবং মালামাল লুটের চেষ্টা চালায়। চাঁদা না দিলে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়। বিষয়টি জেলা প্রশাসক, পুলিশ প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হয়েছে।
এরপর ২১ জানুয়ারি প্রকল্প এলাকা ও কর্মীদের নিরাপত্তা চেয়ে গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আব্দুর রশিদ মন্ডল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে চিঠি দেন। চিঠির অনুলিপি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ অন্যান্য দপ্তরে পাঠানো হয়।
চাঁদাবাজির বিষয়ে রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম জানান, উন্নয়ন সমন্বয় সভায় বিষয়টি আলোচিত হয়েছে এবং পুলিশ ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে। তিনি বলেন, “রাজবাড়ীতে চাঁদাবাজি কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না।”
রাজবাড়ী নাগরিক কমিটির সভাপতি জ্যোতি শঙ্কর ঝন্টু বলেন, “হাসপাতালের মতো মানবিক স্থাপনায় চাঁদাবাজির ঘটনা রাষ্ট্রের জন্যই হুমকি। দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা জরুরি।”
উল্লেখ্য, রোগীদের সেবায় আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে ২০১৮ সালে রাজবাড়ী জেলা সদর হাসপাতালকে ৫০ কোটি টাকার প্রকল্পে ২৫০ শয্যায় উন্নীতকরণের কাজ শুরু হয়। এর অংশ হিসেবে ৩ কোটি ৯১ লাখ ৮১ হাজার টাকা ব্যয়ে ৮ তলা পর্যন্ত লিফট স্থাপনের কাজ চলমান ছিল, যা বর্তমানে চাঁদাবাজির কারণে বন্ধ রয়েছে।