নিজস্ব প্রতিবেদক: টোকিওতে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে ষষ্ঠ ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) গতকাল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আসন্ন জাপান সফর নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়েছে বলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
টোকিওতে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে ষষ্ঠ ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) গতকাল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আসন্ন জাপান সফর নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়েছে বলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এতে আরো বলা হয়, চলতি বছরেই দুই দেশের মধ্যে হতে পারে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ)। জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, দুই পক্ষ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো জোরদারের পাশাপাশি আঞ্চলিক পরিস্থিতি ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি নিয়েও মতবিনিময় করেছে।
ষষ্ঠ এফওসিতে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (পূর্ব) সচিব রাষ্ট্রদূত ড. মো. নজরুল ইসলাম এবং জাপানের পক্ষে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র ডেপুটি মিনিস্টার মি. তাকেশি আকাহোরি। আলোচনায় রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও খাতভিত্তিক সহযোগিতা; বাণিজ্য ও বিনিয়োগ; জনগণের মধ্যে সংযোগ ও সাংস্কৃতিক বিনিময়; জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের (রোহিঙ্গা) নিরাপত্তা সহযোগিতাসহ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয় উঠে আসে। সভায় মানবসম্পদ উন্নয়ন, জ্বালানি রূপান্তরে যৌথ ঋণ ব্যবস্থা, জলবায়ু পরিবর্তন, দুর্যোগ ও ভূমিকম্প ব্যবস্থাপনা, বর্জ্য শোধনাগার, ট্রিটমেন্ট স্টোরেজ ও ডিসপোজাল ফ্যাসিলিটি (টিএসডিএফ), সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র, কৃষির যান্ত্রিকীকরণ ও জাহাজ কারখানার আধুনিকীকরণ নিয়েও আলোচনা হয়। জাপানের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি তাদের দৃঢ় সমর্থন এবং সংস্কারমূলক উদ্যোগগুলোর প্রশংসা করা হয়। তারা বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অগ্রগতির জন্য সহায়তা অব্যাহত রাখবে বলেও জানানো হয় প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে।'
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উভয় পক্ষ রাজনৈতিক আস্থা আরো গভীর করা, উন্নয়ন কৌশলকে অগ্রাধিকার দেয়া এবং ‘কৌশলগত অংশীদারত্ব’ পূর্ণভাবে বাস্তবায়নের বিষয়ে একমত হয়। এলডিসি উত্তরণের পর বাংলাদেশী পণ্যের জন্য শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত (ডিএফকিউএফ) প্রবেশাধিকার অব্যাহত রাখার অনুরোধকে জাপান ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করার পাশাপাশি ফল ও সবজি তাদের বাজারে প্রবেশাধিকার নিশ্চিতে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেয়। উভয় পক্ষ ইপিএর আলোচনার অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে এবং আশা প্রকাশ করে যে এটি চলতি বছরের মধ্যেই চূড়ান্ত হবে। সেই সঙ্গে বিগ বি উদ্যোগের অধীনে জাপানের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে আরো শক্তিশালীভাবে সম্পৃক্ত থাকবে। উচ্চমানের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে এবং জাপানি উৎপাদন ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে বাংলাদেশে তাদের উৎপাদন ও শিল্প শৃঙ্খল সম্প্রসারণে উৎসাহিত করবে। মুক্ত ও অবাধ ইন্দো-প্যাসিফিক এবং বিগ বি উদ্যোগের নতুন পরিকল্পনার আওতায় জাপান এ অঞ্চলের টেকসই উন্নয়ন দেখতে চায় বলেও জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এদিকে বাংলাদেশ জাপানের কাছে আরো সরকারি উন্নয়ন সহায়তা (ওডিএ) ঋণ, ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বৃদ্ধির অনুরোধ এবং বাজেট সহায়তা চেয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণায়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। উভয় দেশের সম্পদ, কৌশলগত অবস্থান ও সক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে জনগণের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা হবে—এমন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ফরেন অফিস কনসালটেশন শেষ হয় বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।'