ঘাঁটি বানাতে রোহিঙ্গাদের গ্রাম ধ্বংস করে মিয়ানমার সেনারা

অনলাইন ডেস্ক: ২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর লোকজনকে বিতাড়নের পর দেশটির সামরিক বাহিনী তাদের গ্রাম, মসজিদ, অবকাঠামো ধ্বংস করেছে। সেই সঙ্গে তারা রোহিঙ্গাদের বিস্তীর্ণ জমি দখল করে নেয়। একটি সামরিক ঘাঁটি তৈরির জন্য তারা এটি করেছে। রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর ধ্বংসের কাজে তারা ব্যক্তিমালিকাধীন কয়েকটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে। তারাই বুলডোজার দিয়ে তা বাস্তবায়ন করেছে।

মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের বিতাড়ন নিয়ে চালানো এক স্বাধীন তদন্তে এসব তথ্য উঠে এসেছে। জাতিসংঘ সমর্থিত ইন্ডিপেনডেন্ট ইনভেস্টিগেশন মেকানিজম ফর মিয়ানমার (আইআইএমএম) এ তদন্ত চালায়।

তাদের প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে গতকাল সোমবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, তৎকালীন মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ পদ্ধতিগতভাবে রোহিঙ্গাদের গ্রাম, তাদের মসজিদ, কবরস্থান ও কৃষিক্ষেত্র ধ্বংস করেছে। অফিশিয়াল রেকর্ড থাকার কারণে রোহিঙ্গাদের ভূমির অধিকার সম্পর্কে তাদের আগে থেকেই ধারণা ছিল। তথাপি তারা এটি করেছে।

মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চি তখন ক্ষমতায় ছিলেন। সেনা সমর্থিত তাঁর সরকার ক্ষমতায় থাকাকালেই রোহিঙ্গাদের ওপর এ গণহত্যা চালানো হয়। প্রতিবেদনের বিষয়ে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্রের সঙ্গে কথা বলতে রয়টার্সের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি। প্রত্যক্ষদর্শী, স্যাটেলাইট ছবি, ভিডিও ফুটেজ, অফিশিয়াল রেকর্ড ও নথিপত্র ঘেঁটে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

এর আগে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী বলেছে, ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো অভিযানের সময় রাখাইনে তারা কোনো গণহত্যা চালায়নি। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের একদিন আগে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলো। প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সহিংস হামলার মুখে হাজার হাজার মানুষকে তাদের ঘরবাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। বর্তমানে তাদের প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে ঘনবসতিপূর্ণ পরিবেশের মধ্যে বসবাস করছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে বিস্ময়কর একটি বিষয় উঠে এসেছে। এতে বলা হয়, ব্যক্তিমালিকানাধীন কোম্পানি ও তাদের সংশ্লিষ্টরা সরাসরি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তারা পরিকল্পনা ও কর্মী দিয়ে বুলডোজার ব্যবহার করে গ্রামগুলো ও অবকাঠামো ধ্বংস করেছে। মিয়ানমারের তৎকালীন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের এ-সংক্রান্ত চুক্তি হয়।

রাখাইনের ইন দিন গ্রামে নতুন স্থাপনা তৈরি করতে বসতি উচ্ছেদের সময় সামরিক বাহিনী ১০ রোহিঙ্গা পুরুষকে হত্যা করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের উচ্ছেদ করে ইন দিন গ্রামে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী একটি ঘাঁটি নির্মাণ করে। নতুন করে সেখানে অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়। সেই সঙ্গে তৈরি করা হয় দুটি হেলিকপ্টার প্যাডও। মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় অপরাধ তদন্তে ২০১৮ সালে আইআইএমএম গঠন করে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল।,

Facebook
Twitter
WhatsApp
Pinterest
Telegram

এই খবরও একই রকমের

সলঙ্গায় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন 

জুয়েল রানা: সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানা বিএনপি এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচারের প্রতিবাদে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেছে যুবদল, কৃষকদল ও ছাত্রদল।

পরমাণু স্থাপনাগুলোতে কোনো সংস্থাকে প্রবেশের অনুমতি দেবে না ইরান

অনলাইন ডেস্ক: ইরান তার পরমাণু স্থাপনাগুলোতে কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থাকে শারীরিক প্রবেশাধিকার দেবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ইরানের সংসদের জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক কমিশনের

গোয়ালন্দে নুরাল পাগলা ইস্যু; নেপথ্য আ.লীগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নিজেকে ‘ইমাম মাহদী’ দাবিকারী নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার দরবারে হামলা, লুটপাট ও কবর থেকে লাশ তুলে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র

মায়ের অপমানের প্রতিশোধ নিতে ১০ বছর পর নৃশংস খুন

অনলাইন ডেস্ক: মাত্র ১১ বছর বয়সে মায়ের অপমান সহ্য করতে হয়েছিল সোনু কাশ্যপকে। সেই ঘটনার প্রতিশোধ নিতে তিনি অপেক্ষা করেছেন এক দশক। শেষ পর্যন্ত ২১

দেশের উন্নয়ন ও মানবকল্যাণে কাজ করছে জামায়াতে ইসলামী: অধ্যক্ষ আলী আলম

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মানবতা, মনুষ্যত্ব ও নৈতিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন ধারার সূচনা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন সিরাজগঞ্জ-৫ আসনের দলটির মনোনীত

কাজী ডাকতে গেল প্রেমিক, প্রেমিকাকে নিয়ে পালাল বন্ধু-অতপর!

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিয়ে করার জন্য বাড়ি থেকে প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়েছে প্রেমিকা। বন্ধুর কাছে প্রেমিকাকে রেখে কাজীকে ডাকতে যান প্রেমিক। এ সুযোগে প্রেমিকাকে নিয়ে পালিয়ে যায়