আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস কাতার-মিসর প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলেও ইসরায়েল প্রস্তাবটি নিয়ে কোনো ভ্রুক্ষেপ করেনি। উল্টো দখলদার রাষ্ট্রটি গাজা দখল পরিকল্পনার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। ফলে ২০ হাজার রিজার্ভ সেনার সঙ্গে আরও ৬০ হাজার সেনা যুক্ত হবে।
এতে রিজার্ভ সেনা দাঁড়াবে ৮০ হাজার। আর যুদ্ধরত সেনা মিলে এক লাখ ২০ হাজার সেনা নিয়েই গাজা দখলের পরিকল্পনা এঁটেছে ইসরায়েল। তারা নতুন অভিযানের নাম দিয়েছে ‘গিডিয়ানের রথস বি’। এই অবস্থায় গাজার পরিস্থিতি পর্যায়ে গড়াচ্ছে; যদিও আলোচকরা ইসরায়েল-হামাসকে যুদ্ধরিবতিতে আনতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
আলজাজিরা জানায়, গাজার পরিস্থিতি আরও অমানবিক হয়ে উঠেছে। উপত্যকার দেইর এল-বালাহতে নিদ্রাহীন রাত কাটাচ্ছেন বাসিন্দারা। কারণ আকাশে ইসরায়েলি ড্রোন ও যুদ্ধবিমান ওড়াউড়ি করছে। ইসরায়েল নিজেদের তথাকথিত নিরাপদ অঞ্চলে বোমা হামলা করে ঘরবাড়ি এবং অস্থায়ী শিবির ধ্বংস করছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২২ ত্রাণপ্রত্যাশীসহ ৫৬ ফিলিস্তিনি নিহত ও ক্ষুধায় মারা গেছেন তিনজন। ২২ মাসে ৬২ হাজার ৬৪ নিহত ও এক লাখ ৫৬ হাজার ২৭৩ জন আহত হয়েছেন।,
আল-মাওয়াসির একজন ফিলিস্তিনি বাবা জানান, বিমান হামলায় তিনি সন্তানদের হারিয়েছেন। তাদের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। গাজা শহরে আক্রমণের তীব্রতা বেড়েছে। শহরের পূর্ব অংশে ইসরায়েলি ভারী কামান ঘরবাড়ি ধ্বংস করেছে। ইসরায়েল গাজা সিটিতে সৈন্য সমাবেশ করছে। ৪৫০টিরও বেশি বাড়িঘর ধ্বংস করা হয়েছে। গাজা শহর থেকে দক্ষিণে পালিয়ে যাচ্ছেন বাসিন্দারা। আরেক বাসিন্দ মাজেদ আল-মাশৌখি বলেন, হামলায় তাঁর মেয়েসহ পুরো পরিবার নিহত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমার পরিবার চলে গেছে। আমার মেয়ে চলে গেছে তার স্বামী এবং সন্তানদের সঙ্গে। তাদের মুছে ফেলা হয়েছে।’
বার্তা সংস্থা এপি জানায়, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) প্রধান ইয়াল জামির গাজার সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় অভিযান শুরু করতে যাচ্ছেন। গাজার প্রায় ৭৫ শতাংশ এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে। মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো সতর্ক করেছে, গাজার বেশির ভাগ বাসিন্দা বাস্তুচ্যুত হওয়ার পথে। গাজা শহর থেকে বাঁচতে দক্ষিণে ছুটলেও মূলত নিরাপদ এলাকা নেই। গাজায় আটক ইসরায়েলি বন্দিদের আত্মীয়স্বজনের বক্তব্য, যুদ্ধবিরতি না মেনে নেতানিয়াহু ইসরায়েলের পরিবার ও জনসাধারণের হৃদয়ে ছুরি মারছেন। একজন ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তা এপিকে বলেন, গাজা শহরের জেইতুন ও জাবালিয়া এলাকায় বিমান হামলা চলছে।
নেতানিয়াহুকে পাল্টা জবাব অস্ট্রেলিয়ার মন্ত্রীর
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ তুলেছেন নেতানিয়াহু। তিনি বলেছেন, আলবানিজকে দুর্বল রাজনীতিবিদ হিসেবে স্মরণ করা হবে। এর আগে সোমবার অস্ট্রেলিয়া নেতানিয়াহু সরকারের অতি-ডানপন্থি সদস্যকে দেশটিতে প্রবেশে বাধা দেয়। দুই সরকারের টানাপোড়েনে অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টনি বার্ক নেতানিয়াহুকে পাল্টা কড়া কথা শুনিয়েছেন। বার্ক এবিসি রেডিওকে বলেন, ‘মানুষ হত্যা করে, শিশুদের অভুক্ত রেখে শক্তি পরিমাপ হয় না।’ গতকাল এক ব্রিফিংয়ে আলবানিজও কথা বলেন। এসব বিষয়কে তিনি ব্যক্তিগতভাবে নেন না বলে জানান।
নেতানিয়াহুকে ‘যুদ্ধের নায়ক’ বললেন ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ‘যুদ্ধের নায়ক’ হিসেবে প্রশংসা করেছেন। যদিও গাজায় যুদ্ধাপরাধের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলি নেতাকে খুঁজছে। ট্রাম্প বলেন, ‘নেতানিয়াহু একজন যুদ্ধের নায়ক। আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি। আমার মনে হয় আমিও তাই।’ রক্ষণশীল রেডিও হোস্ট মার্ক লেভিনে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।’
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.