
অনলাইন ডেস্ক: গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর টানা বিমান হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৬২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, শুক্রবার রাত থেকে শুরু হয়ে শনিবার সকাল পর্যন্ত হামলা অব্যাহত ছিল। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সবচেয়ে ভয়াবহ হামলাগুলোর একটি চালানো হয় গাজার ফিলিস্তিন স্টেডিয়ামের কাছে অবস্থিত একটি শরণার্থী আশ্রয়কেন্দ্রের পাশে, যেখানে অন্তত ১২ জন নিহত হন।
শনিবার দুপুরের আরেক হামলায় প্রাণ হারান আরও ১১ জন।
গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় আল-মাওয়াসি এলাকায় ঘুমন্ত অবস্থায় একটি বাস্তুচ্যুত পরিবার তাদের তাবুতে হামলার শিকার হয়ে প্রাণ হারায়।
গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে হামাসের ইসরায়েল আক্রমণের পর শুরু হওয়া যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৫৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অর্ধেকই নারী ও শিশু।
গাজার পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ হয়ে উঠছে। ইসরায়েলি অবরোধে দুই মাসের বেশি সময় ধরে চরম খাদ্য সংকটে রয়েছে অঞ্চলটি। মে মাসের শেষভাগ পর্যন্ত খাদ্য সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ ছিল। বর্তমানে খুব সীমিত পরিসরে কিছু ত্রাণ প্রবেশ করলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।
ইউনিসেফ জানিয়েছে, গাজায় বর্তমানে ৬০% পানি উৎপাদন কেন্দ্র অকার্যকর হয়ে গেছে এবং এপ্রিল থেকে মে মাসের মধ্যে শিশুদের অপুষ্টির হার বেড়েছে ৫০%।
ত্রাণ সংগ্রহ করতে বহু ফিলিস্তিনিকে প্রতিদিন দীর্ঘ পথ হেঁটে নির্ধারিত বিতরণ পয়েন্টে পৌঁছাতে হচ্ছে, যেখানে আবারও রয়েছে নিরাপত্তা হুমকি।
মার্কিন বেসরকারি সংস্থা গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) এসব পয়েন্টে ত্রাণ বিতরণে নিয়োজিত। তবে অভিযোগ উঠেছে, ইসরায়েলি সেনারা এসব পয়েন্টে জড়ো হওয়া অসহায় ক্ষুধার্ত মানুষের ওপর সরাসরি গুলি চালাচ্ছে, এতে এখন পর্যন্ত ৫০০’র বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ১৫টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা জিএইচএফ-কে গাজায় তাদের কার্যক্রম বন্ধ করতে আহ্বান জানিয়েছে। তাদের অভিযোগ, সংস্থাটি যুদ্ধাপরাধে সহায়তা করছে এবং নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনতার নীতিমালা লঙ্ঘন করছে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, আলজাজিরা