
অনলাইন ডেস্ক: গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি হামলায় প্রতিদিন শত শত ফিলিস্তিনি নিহত হচ্ছেন। নিহতদের দাফনের জন্য কাফনের কাপড় পর্যন্ত মিলছে না। হাসপাতালের বিছানার চাদর, জানালার পর্দা, এমনকি পুরনো কম্বল দিয়েই দাফন সম্পন্ন করতে হচ্ছে স্বজনদের।
স্বেচ্ছাসেবকরা জানাচ্ছেন, খাদ্য ও ওষুধের মতোই কাফনের কাপড়েরও তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ইসরাইলি বাহিনী কাফন তৈরির কারখানাগুলো ধ্বংস করে দিয়েছে। গত পাঁচ মাস ধরে গাজার সব সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ থাকায় কোনো ত্রাণ সামগ্রী প্রবেশ করতে পারছে না। ফলে মৃত্যু ও মানবিক সংকট একসাথে ভর করেছে গাজাবাসীর ওপর।
গাজা শহরের কিরাতান দাতব্য সংস্থার স্বেচ্ছাসেবক আবদুল করিম আবু জাসের বলেন, ‘অনেক আগেই কাফনের কাপড় ফুরিয়ে গেছে। আমাদেরকে এখন বিছানার চাদর, জানালার পর্দা দিয়েই শহীদদের মুড়িয়ে দাফন করতে হয়।’
৫২ বছর বয়সি ফুয়াদ আল-সৌসি এক সময় নিজ হাতে কাফনের কাপড় তৈরি করতেন। তার ঘরটিও ধ্বংস হয়ে গেছে ইসরাইলি আগ্রাসনে। তবু হাল ছাড়েননি তিনি। নতুনভাবে সীমিত পরিসরে কাজ শুরু করলেও, প্রতিদিন ৭০ থেকে ১০০ জন নিহত হওয়ায় তার পক্ষে পর্যাপ্ত কাপড় তৈরি সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, ‘যেভাবেই হোক, শহীদদের ঢেকে দাফন করছি। কখনো পর্দা, কখনো চাদর দিয়েই কাফন বানাতে হচ্ছে।’
গাজার অলিগলি এখন সাদা মরদেহ ব্যাগে ঢাকা। এক স্বজন বিলাপ করে বলছিলেন, ‘সাদা রঙটাই এখন আতঙ্কের প্রতীক। আমার নিজের জালাবিয়াও পরতে ভয় লাগে।’
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। ইসরাইলি অভিযানে গাজার অবকাঠামো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্যব্যবস্থা, দেখা দিয়েছে তীব্র খাদ্য ও মানবিক সংকট।
এ যেন শুধু মৃত্যু নয়, মর্যাদার সঙ্গেও গাজাবাসীর লড়াই।