
অনলাইন ডেস্ক: ইসরাইলের টানা অবরোধ ও সামরিক আগ্রাসনের ফলে মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে গাজা উপত্যকা। গত ২৪ ঘণ্টায় অনাহারে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৫ জন ফিলিস্তিনি নাগরিক, যাদের মধ্যে চারজন শিশু রয়েছে। এ নিয়ে চলমান সংঘাতের শুরু থেকে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০১ জনে, যার মধ্যে ৮০ জনই শিশু। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে—খবর আল জাজিরার।
গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে চলমান খাদ্য সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। জাতিসংঘ পরিস্থিতিকে বর্ণনা করেছে ‘মৃত্যু ও ধ্বংসের এক ভয়াবহ প্রদর্শনী’ হিসেবে। বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (WFP) জানিয়েছে, গাজার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ কয়েকদিন ধরে না খেয়ে রয়েছেন।
আল জাজিরা জানায়, অনাহারে মারা যাওয়া শিশুদের একজন ছয় সপ্তাহ বয়সী ইউসুফ আবু জাহির, যিনি দুধের অভাবে প্রাণ হারান। শিশুটির চাচা আদহাম আল-সাফাদি বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, “বাজারে কোথাও দুধ নেই। আর পাওয়া গেলেও একটি ছোট কৌটার দাম ১০০ ডলার পর্যন্ত।”
চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে ইসরাইলি অবরোধের কারণে গাজায় খাদ্য মজুদ একেবারে শেষ হয়ে গেছে। মে মাসে আংশিক অবরোধ শিথিল করে সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দেয় ইসরাইল। বর্তমানে গাজায় ত্রাণ সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ নামক একটি বিতর্কিত সংস্থা, যেটি ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে পরিচালিত। তবে এ সংস্থার ত্রাণ সংগ্রহের সময় ইসরাইলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।
নির্যাতিত গাজাবাসীর জন্য টেকসই মানবিক করিডর, নিরবিচারে ত্রাণ সহায়তা এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দাবি এখন আন্তর্জাতিক পরিসরে আরও জোরালো হয়ে উঠেছে।