
আইএসপিআর জানায়, আইন-শৃঙ্খলার অবনতির মধ্যে মানবিক বিবেচনায় আশ্রয় দেওয়া হয় বিচারক, পুলিশ, রাজনৈতিক নেতা ও সাধারণ নাগরিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষকে।
নিজস্ব প্রতিবেদক: গত ৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে প্রাণরক্ষার তাগিদে বিভিন্ন পেশার মোট ৬২৬ জন নাগরিক দেশের বিভিন্ন সেনানিবাসে আশ্রয় নেন। বৃহস্পতিবার রাতে এক আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তাদের মধ্যে ৫৭৮ জনের নাম প্রকাশ করেছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
আইএসপিআর জানায়, জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর সরকারের পতনের প্রেক্ষিতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটে। এ সময় বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, থানা ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে হামলা, অগ্নিসংযোগ, চুরি-ডাকাতি ও গণপিটুনির মতো ঘটনাবলি ঘটতে থাকে। ফলে বহু নাগরিক নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকেন।
এই পরিস্থিতিতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন সেনানিবাসে জীবন বাঁচাতে আশ্রয় প্রার্থনা করেন রাজনীতিক, বিচারক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, পুলিশ সদস্যসহ সাধারণ মানুষ। আইএসপিআর বলছে, “পরিস্থিতির তাৎক্ষণিক বিপজ্জনক প্রকৃতির কারণে আশ্রয়প্রার্থীদের পরিচয় যাচাইয়ের চাইতে তাদের জীবন রক্ষাকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।”
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আশ্রয়প্রাপ্তদের মধ্যে ছিলেন ২৪ জন রাজনৈতিক নেতা, ৫ জন বিচারক, ১৯ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ৫১৫ জন পুলিশ সদস্য, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা এবং ১২ জন অন্যান্য পেশাজীবী। এছাড়াও ৫১ জন পরিবারের সদস্যও আশ্রয় গ্রহণ করেন।
আইএসপিআর আরও জানায়, মানবিক দায়বদ্ধতা থেকে সেনাবাহিনী এই পদক্ষেপ নেয় এবং পরিস্থিতির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে বেশিরভাগ ব্যক্তি এক থেকে দুই দিনের মধ্যেই সেনানিবাস ত্যাগ করেন। কেবল ৫ জনকে আইনানুগ প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এর আগে গত ১৮ আগস্ট আইএসপিআর একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ১৯৩ জনের একটি তালিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেছিল। এতে বলা হয়, সেনানিবাসে আশ্রয়প্রার্থীদের নিরাপত্তা বিধান ছিল সাময়িক এবং নিছক মানবিক বিবেচনায় নেওয়া পদক্ষেপ।
তবে আইএসপিআর দুঃখ প্রকাশ করে জানায়, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে দূরত্ব তৈরির অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংযুক্ত তালিকায় উল্লেখ করা হয়েছে, আশ্রয়প্রাপ্তদের মধ্যে ৪৩২ জন সাধারণ পুলিশ সদস্য এবং ১ জন জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) সদস্য রয়েছেন।