চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি: একটি রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ২০২৪ সালে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটেছিলো। সেই গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রজনতার ওপর শেখ হাসিনা নিজেই গুলি চালানোর অর্ডার দিয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন
ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
মঙ্গলবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গায় 'জুলাই পদযাত্রা' কর্মসূচিতে রাখা বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে গণঅভ্যুত্থানে যে মারনাস্ত্র ব্যবহার হয়েছে তা চালানোর অর্ডার দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। এসকল হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী খুনি হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ।
সীমান্ত হত্যা নিয়ে তিনি বলেন, গত চুয়ান্ন বছরে সীমান্তে বহু বাংলাদেশী মানুষকে খুন করেছে বিএসএফ। বিএসএফ কোনো সীমান্তরক্ষী বাহিনী নয় বিএসিএফ খুনী বাহিনীতে পরিনত হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষকে খুন করাই যেন তার একমাত্র দ্বায়িত্ব।
এনিসিপির এই নেতা বলেন, গত চুয়ান্ন বছর বাংলাদেশের মানুষের গোলামীর জীবনযাপন করতে হয়েছিলো ভারতের আধিপত্যের কাছে। এ দেশের মানুষের স্বাধীনতা, স্বার্বভৌমত্ব বারবার ক্ষুন্ন হয়েছে ভারতীয় আধিপত্য দ্বারা।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আমাকে আমার পানির ন্যাহ্য হিস্যা দেওয়া হয়নি। বরং রাজিনৈতিক ভাবে, অর্থনৈতিক ভাবে বারবার অবদমন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার ১৬ বছর ক্ষমতায় টিকেছিলো এই ভারতের প্রতক্ষ এবং পরোক্ষ সমর্থনে।
তিনি বলেন, সীমান্তে হত্যা করা হয়েছে নির্বিচারে। আমরা স্পষ্ট ভাবে বলতে চাই, সীমান্ত হত্যা কোনোভাবেই মেনে নেব না। বাংলাদেশের সীমান্ত, বাংলাদেশের মানচিত্র রক্ষা করা তরুণ যুবকদের দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব আমরা নিয়েছে। আর সেই দায়িত্বের ভিত্তিতেই জাতীয় নাগরিক পার্টি কাজ করবে।
তিনি আরও বলেন, শুধু বাংলাদেশ ভারতের ওপর নির্ভরশীল নয়। ভারতও বাংলাদেশের ওপর নির্ভরশীল। ভারতের অখণ্ডতা, স্বার্বভৌমত্ব বাংলাদেশের ওপর নির্ভরশীল। এটা যেন ভারত ভুলে না যায়।
এনসিপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের পর আমরা একটা বৈষম্যহীন সম্প্রীতুর বাংলাদেশ চেয়েছিলাম কিন্তু আমরা দেখছি রাজিনৈতিক নানা অন্তর্কোন্দলে বহু মানুষ মারা যাচ্ছে।
তিনি বলেন, চাঁদাবাজ, দূর্নিতি আর দখলদ্বারিত্ব পুরো বাংলাদেশে ছেয়ে দিয়েছে। আমরা আজ চুয়াডাঙ্গাবাসীকে বলতে এসেছি আপনারা ভয় পাবেন না। আপনার সন্তানেরা, ছোট ছোট বাচ্চারা, যুবকেরা, আলেম সমাজ সবাই মিলে রাজপথে নেমেছিলো ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে, তারা ভয় পাইনাই। বাংলাদেশকে নতুন করে স্বাধীনতা দিয়েছিলো, মুক্তি দিয়েছিলো আপনাদের সন্তানেরা, হিন্দু মুসলিম একত্রে। আমরা নতুন করে আর ভয়ের বাংলাদেশ দেখতে চাইনা।
এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টায় জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার হাটবোয়ালিয়ায় স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের মধ্য দিয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলায় ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি শুরু হয়।
‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি- এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহ, ডা. তাসনিম জারাসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.