
ঠিকানা টিভি ডট প্রেস: রাজধানীর মালিবাগের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সুন্নতে খতনা করাতে গিয়ে চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় দুই চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করা হয়েছে।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি’) হাতিরঝিল থানার ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) সুজন জানিয়েছেন, সকালে দুই চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন- এস এম মুক্তাদির ও মাহবুব।
একদিন মালিবাগের জেএস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারে এসে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. আবু হোসেন মো. মইনুল আহসান জানান, প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করা হয়েছে।
তিনি জানান, অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়ার জন্য হাসপাতালের অনুমোদন প্রয়োজন হয়, কিন্তু এই হাসপাতালের শুধুমাত্র ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অনুমোদন আছে। যে কারণে তাদের অ্যানেস্থেসিয়া প্রয়োগের কোনো সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, মুসলমানির জন্য শিশুটিকে এই হাসপাতালে আনা হয়। অভিযোগ অনুসারে অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়ার সময় শিশুটিকে অজ্ঞান করার পর আর তার জ্ঞান ফেরেনি। পরে আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পেরেছি।
ডা. মইনুল আহসান বলেন, হাসপাতালটির সব তথ্য আমাদের হাতে এসেছে। আমরা সেগুলো পর্যবেক্ষণ-পর্যালোচনা করছি। আমরা আরও তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেবো। আর যিনি অপারেশন করেছেন, তার বিরুদ্ধে আমরা আমাদের আইন অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।
এদিকে শিশুটির পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় দেওয়া অভিযোগে বলা হয়, মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি’) রাত আটটার দিকে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র আহনাফ তাহমিন আয়হামকে (১০) মালিবাগের জে এস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিক্যাল চেকআপ সেন্টারে ভর্তি করানো হয়। খতনা করার আগে অ্যানেসথেসিয়া দেওয়ার পর তার আর জ্ঞান ফেরেনি। লোকাল অ্যানেসথেসিয়া দেওয়ার কথা থাকলেও ফুল অ্যানেসথেসিয়া দেওয়া হয় আয়হামকে। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
হাতিরঝিল থানার অফিসার ইনচার্জ আওলাদ হোসেন জানিয়েছেন, শিশুটির বাবা ডা. এস এম মুক্তাদিরসহ তিন জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৫ জন অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
উল্লেখ্য, গত আট জানুয়ারি রাজধানীর সাতারকুল বাড্ডার ইউনাইটেড মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে খতনা করাতে গিয়ে টানা সাত দিন লাইফ সাপোর্টে থাকা শিশু আয়ান মারা যায়। এ ঘটনার রেশ না কাটতেই আরও একবার একই ঘটনা ঘটলো।’