
নিজস্ব প্রতিবেদক: গত পাঁচ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দলটির নেতাকর্মীরা দেশ ছেড়েছেন আবার কেউ গা ঢাকা দিয়েছেন। কেউ আবার লেবাস পাল্টে ভিড়ছেন অন্য দলগুলোতে। রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের এক নেতাকে ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনোনীত ও ভোট না করে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নিয়ে কমিটি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রংপুর নগরীর সুমি কমিউনিটি সেন্টারে দুই বিএনপি নেতা সংবাদ সম্মেলন করেন। এতে পীরগঞ্জ উপজেলার মদনখালী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী জাহিদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, কৃষকলীগ নেতা শাহজাহান আলীকে ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, গত ১ ফেব্রুয়ারি মদনখালী ইউনিয়ন বিএনপির তফসিল ঘোষণা করা হয়। ৩ ও ৪ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র জমা, ৯ ফেব্রুয়ারি যাচাই-বাছাই, প্রতীক বরাদ্দ ও সম্মেলনের সময় নির্ধারণ করা হয়। আমি নিয়ম মেনে ৮ হাজার টাকা দিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করি এবং প্রতিটি ওয়ার্ডের সভাপতি-সম্পাদকসহ সকলের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভোট চাই। কিন্তু ৯ ফেব্রুয়ারির সম্মেলনে কোনো নির্বাচন হয়নি। উপজেলার নেতারা যোগসাজশ করে তাদের মনোনীত কৃষকলীগ নেতা শাহজাহান আলীকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন। এতে আমি ও স্থানীয় নেতাকর্মীরা হতাশ হয়েছি।’
এই ঘটনা লিখিতভাবে উপজেলা কমিটিকে জানানোর পাশাপাশি জেলার নেতাদের অবহিত করেও প্রতিকার না পাওয়ার অভিযোগ করে জাহিদুল ইসলাম। একই সংবাদ সম্মেলনে উপজেলার চৈত্রকোল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি প্রার্থী মমিনুর রহমান অভিযোগ করেন, গত ১ ফেব্রুয়ারি চৈত্রকোল ইউনিয়ন বিএনপির তফসিল ঘোষণা করা হয়। আমি ১০ হাজার টাকা দিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করি এবং ভোটের জন্য মাঠে নামি। তবে ৬ ফেব্রুয়ারি প্রতীক বরাদ্দ হওয়ার কথা থাকলেও তা না করে ৮ ফেব্রুয়ারি সরাসরি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে কোনো ভোট না নিয়ে উপজেলা নেতারা তাদের পছন্দের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, সম্মেলনের দিন সকালে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি একটি রেজুলেশন লেখেন, যেখানে বলা হয়, থানা বিএনপি যাদের কমিটিতে মনোনীত করবে, সবাইকে তা মেনে নিতে হবে। এতে অনেকে না পড়েই স্বাক্ষর করেন। আমি সভাপতি প্রার্থী হলেও এতে স্বাক্ষর করিনি।’
সংবাদ সম্মেলনে দুই নেতা অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের নেতাদের বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো এবং দলের অভ্যন্তরীণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া লঙ্ঘন করা হয়েছে। তারা অনিয়মতান্ত্রিকভাবে গঠিত কমিটি বাতিল করে ভোটের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানান এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। অভিযোগের বিষয়ে জানতে পীরগঞ্জ থানা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক জাকির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, শাহাজাহান আলী দীর্ঘদিন আগে কৃষকলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সঠিকভাবে কাউন্সিল এর মাধ্যমে সভাপতি-সম্পাদকসহ অন্যান্য পদে প্রার্থী ফাইনাল করা হয়েছে আর অনেকে পদ না পেলে অনেক কথা বলেন, এটাই স্বাভাবিক। ঘোষিত কমিটির সম্মেলনে উপস্থিত থেকে ভোট ছাড়া কমিটি ও কৃষকলীগ নেতাকে সাধারণ সম্পাদক করার বিষয়ে জানতে রংপুর জেলা বিএনপির আহবায়ক সাইফুল ইসলামে সাথে মুঠোফোনে কয়েক দফা যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।’