
জেলা প্রতিনিধি, কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় সংঘবন্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক গূহবধূ। স্বামীর সামনে চারজন মিলে ওই গূহবধুকে ধর্ষন করা হয়। শনিবার (২ আগস্ট) রাত সাড়ে ১০টার দিকে কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী জাতীয় মহাসড়কের উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের মসলেমপুর এলাকায় ফাঁকা মাঠ নামক স্থানের একটি লিচু বাগানে এ ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় রাতেই অভিযান চালিয়ে জড়িত সন্দেহে ৫জনকে আটক করেছে ভেড়ামারা থানা পুলিশ।
আটককৃতদের মধ্যে তিনজন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গূহবধুকে ধর্ষনের দায় স্বীকার করেছে। তারা হলেন ভেড়ামারার মসলেমপুর এলাকার মুদি দোকানি টিটু ইসলাম, কালু প্রমাণিক ও ষোলদাগের মুর্শিদ শেখ।
ভুক্তভোগী গূহবধু (২৬) পেশায় হোটেল কর্মচারী। তিনি ভেড়ামারা উপজেলার জুনিয়াদহ ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়া গ্রামের সোহেল আলীর স্ত্রী।
জানা গেছে, কয়েকদিন আগে ওই গূহবধুকে কাজ থেকে বাদ দেয় হোটেল মালিক। ওই গূহবধু হোটেল মালিকের কাছে পাওয়া টাকা আনতে স্বামীকে নিয়ে ভ্যানযোগে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাহিরচর ইউনিয়নের মসলেমপুর ফাঁকা মাঠ এলাকায় পৌছালে তাদের ভ্যান গতিরোধ করে কয়েকজন যুবক। স্বামী-স্ত্রীকে টেনেহিচড়ে একটি লিচু বাগানের মধ্যে নিয়ে যায়। সেখানে স্বামীকে ধরে রেখে একে একে চারজন তার স্ত্রীকে ধর্ষণ করে।
তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন চলে আসলে তারা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহয়তায় স্বামী-স্ত্রী সরাসরি ভেড়ামারা থানায় চলে আসে। ঘটনার পরপরই ভেড়ামারা থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন ৫ জনকে থানায় নিয়ে আসে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনজনের জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পুলিশ। অভিযুক্তরা হলেন টিটু ইসলাম, কালু প্রমাণিক ও ষোলদাগের মুর্শিদ শেখ।
তবে, ঘটনার তদন্ত ও তথ্য প্রাপ্তিতে পুলিশের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করেন ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রব তালুকদার। এমনকি গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে ভুক্তভোগীর স্বামীকে কথা বলতেও দেওয়া হয়নি। রাতভর থানায় অবরুদ্ধ রাখা হয় গূহবধুর স্বামীকে। সাংবাদিকরা কথা বলার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। অনেকেই বলছেন, পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটনার তথ্য গোপন করার চেষ্টা করছে।
এদিকে, ভুক্তভোগী নারীকে রাতেই থানায় নেওয়া হলেও সকাল ৯টা পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করতে হয়েছে। ঘটনার দীর্ঘ সময় পরও তাকে কোনো চিকিৎসাকেন্দ্রে পাঠানো হয়নি। এ নিয়ে প্রশাসনের ভুমিকা নিয়েও জনমনে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রব তালুকদার বলেন , ঘটনার পর পরই অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ৩জনের সরাসরি জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। কিছুক্ষণের মধ্যে ওই নারীকে ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হবে।