নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আবদুল হাই কানু নামে বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত এক মুক্তিযোদ্ধাকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রবিবার (২২ ডিসেম্বর') দুপুরে চৌদ্দগ্রামের কুলিয়ারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি এটিএম আক্তারুজ্জামান।
ইতোমধ্যে এই ঘটনার ১ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ১০ থেকে ১২জন মিলে বীর মুক্তিযোদ্ধা কানুর গলায় জুতার মালা দিয়ে এলাকা এমনকি কুমিল্লায় থাকতে পারবেন না বলে হুমকি দিচ্ছেন। এ সময় তিনি জুতার মালা সরিয়ে এলাকায় আর আসবেন না বলেও জানান।
এ সময় প্রবাসী আবুল হাসেম এক ছেলেকে দেখিয়ে বলেন, 'এই ছেলেটা ক্লাস এইটে পড়ে। তাকেও মামলার আসামি দেওয়া হয়েছে। আমরা তো আওয়ামী লীগের সময় এলাকায় থাকতে পারিনি। আপনি বাকি ৮ বছর কই ছিলেন?” আপনি এখন এলাকায় থাকতে পারবেন না। এসময় অন্যরা বলতে থাকেন-তিনি কুমিল্লা আউট, এলাকা আউট, ছেড়ে দাও।'
হেনস্তার শিকার মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানু বলেন, 'হঠাৎ আমাকে একা পেয়ে জোর করে ওরা জুতার মালা গলায় দিয়ে ভিডিও করেন। বিচার কার কাছে চাইব? মামলা দিয়ে আর কী হবে? তারা সবাই জামায়াতের রাজনীতি করে। আমি আওয়ামী লীগ করলেও বিগত দিনে তাদের কোনও ক্ষতি করিনি। উল্টো আওয়ামী লীগের এমপির রোষানলে পড়ে ৮ বছর এলাকা ছাড়া ছিলাম।'
আবদুল হাই কানুর ছেলে গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘হামলাকারীরা সকলেই স্থানীয় জামায়াত ও শিবিরের চিহ্নিত নেতা-কর্মী। তারা ২০ জনের বেশি ছিলেন। তাঁদের মধ্যে নেতৃত্বে থাকা কয়েকজন হলেন কুলিয়ারা গ্রামের আবুল হাশেম, অহিদুর রহমান, পেয়ার আহমেদ, রাসেল, শহীদ, এমরান হোসেন, ফরহান হোসেন, কামরান হোসেন। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে এভাবে লাঞ্ছিত করা হলো, আমি বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে কার কাছে বিচার চাইব?’
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি এটিএম আক্তারুজ্জামান বলেন, 'ঘটনার পর ওই মুক্তিযোদ্ধা মোবাইল ফোনে বিষয়টি আমাকে অবগত করেছিলেন। এ বিষয়ে তিনি অভিযোগ করবেন না বলেও জানান। তবে রাতে ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ায় তাকে অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ দেবেন কি না বিষয়টি এখনও নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না। জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।'
ঘটনার বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমির মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, 'এ ঘটনার সাথে স্থানীয় জামায়াতের কোনও সম্পৃক্ততা নেই। প্রবাসী আবুল হাসেম আমাদের দলের কেউ না। তবে সমর্থক কিংবা অনুসারী হলেও হতে পারে। এ বিষয়ে আরও খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। জড়িতরা আমাদের কেউ হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.