অনলাইন ডেস্ক: উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলা করতে যাচ্ছেন দেশটির এক সাবেক নাগরিক। চোই মিন কিউং নামের ওই নারী দক্ষিণ কোরিয়ার আদালতে কিম জং উনসহ পিয়ংইয়ংয়ের চার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দেওয়ানি ও ফৌজদারি অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি নিয়েছেন। শুক্রবার (১২ জুলাই) মামলাটি দাখিল করা হতে পারে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
চোই মিন কিউং ১৯৯৭ সালে উত্তর কোরিয়া থেকে চীনে পালিয়ে যান। কিন্তু ২০০৮ সালে তাকে জোরপূর্বক দেশে ফেরত পাঠানো হলে তিনি যৌন নির্যাতন ও নিষ্ঠুর নির্যাতনের শিকার হন। পরে ২০১২ সালে তিনি দক্ষিণ কোরিয়ায় পালিয়ে আসেন এবং বর্তমানে সেখানে মানবাধিকার সংস্থা ডেটাবেইস সেন্টার ফর নর্থ কোরিয়ান হিউম্যান রাইটস (NKDB)-এর সহায়তায় এই মামলা করছেন।
এনকেডিবি জানিয়েছে, চোইয়ের অভিযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ও জাতিসংঘে তোলার পরিকল্পনাও রয়েছে। সংস্থাটির মতে, এটি হবে প্রথমবারের মতো কোনো উত্তর কোরীয় নারী, যিনি দেশটিতে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তিনি সরাসরি শাসকের বিরুদ্ধে মামলা করছেন।
চোই মিন কিউং এক বিবৃতিতে বলেন, “এই ছোট পদক্ষেপটি যেন একদিন স্বাধীনতা ও মানবিক মর্যাদার পুনরুদ্ধারের ভিত্তিপ্রস্তর হয়। আমি মনে করি, কিম রাজবংশকে জবাবদিহির আওতায় আনাই আমার নৈতিক দায়িত্ব।”
দক্ষিণ কোরিয়ার আদালত এর আগেও উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতীকী রায় দিয়েছেন। ২০২৩ সালে একটি রায়ে উত্তর কোরিয়ার নির্যাতনের শিকার দক্ষিণ কোরীয় যুদ্ধবন্দিদের পাঁচ কোটি ওন ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়। ২০২৪ সালে আরেক রায়ে জাপান থেকে প্রত্যাবাসিত পাঁচজন কোরীয়কে ১০ কোটি ওন করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত।
এনকেডিবির নির্বাহী পরিচালক হান্না সং বলেন, “ভুক্তভোগীরা শুধু ক্ষতিপূরণ নয়, বরং স্বীকৃতি চান। আদালতের রায় তাদের আশ্বস্ত করে যে, তাদের কষ্ট ইতিহাসে স্থান পাবে এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি পাবে।”
মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে উত্তর কোরিয়ার শাসকের বিরুদ্ধে এই আইনি লড়াই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন নজির স্থাপন করতে পারে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.