আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিতর্কিত মুসলিম ওয়াকফ আইন কার্যকরের সময় পিছিয়ে দিয়েছে ভারত সরকার। এই আইনের বিরুদ্ধে দেশটির সুপ্রিম কোর্টে বেশ কয়েকটি পিটিশন দায়ের করা হয়েছে। এ নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) আদালতে শুনানি হয়। ওই সময় আদালতকে সরকার পক্ষ জানায়, পরবর্তী শুনানি না হওয়া পর্যন্ত তারা নতুন আইন অনুযায়ী কোনো ‘ওয়াকফ নিয়োগ’ এবং ওয়াকফ বোর্ডের দাবির কোনো পরিবর্তন করবে না। এছাড়া ‘ওয়াকফ বাই ইউজারে’-ও কোনো পরিবর্তন আনা হবে না বলে আদালতকে জানিয়েছে দেশটির কেন্দ্র সরকার।
‘ওয়াকফ বাই ইউজার’ এমন একটি ধারা যেটির মাধ্যমে ওয়াকফ বোর্ড কোনো কাগজপত্র ছাড়াই মুসলিমদের দ্বারা ধর্মীয় ও অথবা দাতব্যে উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত সম্পদ নিজেদের বলে দাবি করতে পারে।
চলতি মাসের শুরুতে ভারতে বিতর্কিত এ ওয়াকফ বিল পাস হয়। এরপর এ নিয়ে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয়। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে আইনটির বিরুদ্ধে আয়োজিত বিক্ষোভে তিনজন নিহত হন। এরপ্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার সুপ্রিম কোর্ট আইনটি কার্যকরে স্থগিতাদেশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু সরকারের অনুরোধের প্রেক্ষিতে এই আদেশ দেওয়া হয়নি। বিতর্কিত ওই আইনে বলা হয়েছিল, এখন থেকে ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিমরাও থাকতে পারবে।'
আজ সরকার আদালতকে ‘ওয়াকফ নিয়োগ’ না করার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে; এরমাধ্যমে মূলত অমুসলিমদের ওয়াফক বোর্ডে স্থান দেওয়ার বিষয়টি স্থগিত রাখার কথা বলা হয়েছে। সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, সরকারের পক্ষে ওয়াকফ আইন নিয়ে শুনানিতে আসেন সলিসিটের জেনারেল তুষার মেহতা। ওই সময় তিনি ওয়াকফ আইন পরিবর্তন চ্যালেঞ্জের জবাব দিতে সাতদিনের সময় চান। তিনি জানান এ সময়ে সরকার আইনটির ধারা ৯ ও ১৪ এর মাধ্যমে কোনো ‘ওয়াকফ নিয়োগ’ করবে না। এরপর সরকারকে সাতদিনের সময় দেন আদালত।
এ দুটি ধারার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ওয়াকফ বোর্ডে ২২ সদস্যের জায়গায় সর্বোচ্চ মাত্র আটজন মুসলিম এবং রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডে ১১ সদস্যের মধ্যে সর্বোচ্চ মাত্র চারজন মুসলিমকে রাখার বিধান করা হয়।
বিষয়টি নিয়ে বেশ প্রতিক্রিয়া দেখান ভারতের প্রধান বিচারপতি সঞ্জিব খান্না। তিনি প্রশ্ন করেন, ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিমদের প্রবেশ করতে দেওয়ার বদলে সরকার কি হিন্দু এন্ডোমেন্ট বোর্ডে মুসলিমদের জায়গা দেবে কি না। আদালত আরও জানিয়েছে, তাদের কাছে ওয়াকফ নিয়ে অসংখ্য পিটিশন দায়ের হয়েছে। যার সবগুলো নিয়ে আদালত কাজ করতে পারবে না। এর বদলে চার থেকে পাঁচটি পিটিশন নিয়ে কাজ করা হবে এবং এগুলোর ওপর রায় দেওয়া হবে।'