
নিজস্ব প্রতিবেদক: ৩১ দিন জিম্মিদের হাতে আটক থাকার পর অবশেষে এমডি আব্দুল্লাহ সোমালিয়া থেকে মুক্তি পেয়েছে। সোমালিয়া থেকে আজ সকালে এই জাহাজটি দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। আগামী ১৯ এপ্রিল মুক্তি পাওয়া জাহাজটি নাবিকদেরসহ দুবাইতে পৌঁছাবে বলে মালিক পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। সেখান থেকে উদ্ধারকৃত ২৩ নাবিককে বিমানযোগে ঢাকায় নিয়ে আসার কথাও জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
কেএসআরএমের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, আন্তর্জাতিক রীতি-নীতি মেনেই তাদের সাথে সমঝোতা করা হয়েছে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমঝোতা করা হয়েছে। নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ আজ সংবাদ সম্মেলন করে এটিকে নববর্ষের উপহার হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং এত দ্রুত সময়ের মধ্যে জিম্মি উদ্ধারের ঘটনায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।’
তবে সকল পক্ষ যে বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন তা হল এমভি আব্দুল্লাহ মুক্ত করার পিছনে কত টাকা খরচ হয়েছে? জলদস্যুদের কত টাকা দেওয়া হয়েছে? এর জবাবে অবশ্য কেএসআরএমের উপদেষ্টা বলেছেন যে এটি আন্তর্জাতিক গোপনীয়তার বিষয়, বিভিন্ন সংস্থা এর সঙ্গে জড়িত এবং যে নিয়ম নীতি আছে সে কারণে তারা এই বিষয়টি নিয়ে নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছেন না।
অন্যদিকে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেছেন যে, টাকার বিনিময়ে বা মুক্তিপণ দিয়ে জিম্মিদের মুক্ত করার বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবহিত নন। এই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটেছে বলে তার জানা নেই। বিষয়টি তিনি এক রকম এড়িয়ে গেছেন। তবে একাধিক সূত্র বলছে যে কেএসআরএম কর্তৃপক্ষ এই ঘটনার পর থেকেই বিভিন্ন দর কষাকষি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল এবং তাদের মাধ্যমেই সোমালিয়ার জলদস্যুদের সাথে টাকাপয়সা লেনদেনের বিষয়টি চূড়ান্ত করে এবং পরোক্ষভাবে কেএসআরএমের মুখপাত্র মিজানুর রহমান স্বীকার করেছেন যে, টাকা দেওয়া হয়েছে। তবে আগের যে এখন তাদের দর-দাম অনেক কমে গেছে বলেও তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন। এখন যেহেতু এই আন্তর্জাতিক আইন কানুন রীতি-নীতি এবং আইন শৃঙ্খলার বিষয়গুলো অনেক জোরালো হয়েছে। সে কারণে জলদস্যুরা যা পাওয়া যায় তাতেই লাভ এরকম একটি অবস্থানে গেছে বলেও কেএসআরএমের মুখপাত্র সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন।
তবে এটা সকল পক্ষই জানেন, প্রকাশ্যে স্বীকার না করলেও তারা অস্বীকার করতে পারবেন না যে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা মুক্তিপণ দেওয়ার বিনিময়ে এমডি আব্দুল্লাহ কে জলদস্যুদের হাত থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এবং টাকা পৌঁছানোর পরপরই জলদস্যুরা জাহাজ ছেড়ে গেছে এবং নাবিকদেরকে মুক্ত করেছে।
প্রশ্ন হল যে, কত টাকা দেওয়া হয়েছে?
সাধারণত জিম্মিদের হাত থেকে জাহাজ উদ্ধারের ঘটনায় টাকার অংক সবসময় অগোচরেই থেকে যায়। কেউ নানা রকম বাস্তবতার কারণে এটি বলতে চায় না। তবে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে কেএসআরএম সোমালিয়ার জলদস্যুদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিল। তারা একটি যুক্তি সঙ্গত মূল্যতেই ২৩ জন নাবিক এবং এমভি আব্দুল্লাহকে উদ্ধার করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যে টাকার অংকটি নিঃসন্দেহে সকলের জন্য একটি সম্মানজনক সমাধান হিসেবেই গ্রহণযোগ্য হয়েছিল। আর এ কারণেই শেষ পর্যন্ত কেএসআরএম হয়তো সেই মুক্তিপণের টাকা দিয়ে জাহাজটি গ্রহণ করতে আর কালক্ষেপণ করেনি।’