
ডেস্ক রিপোর্ট: এবার ফিলিস্তিন ইস্যুর ওপর ভর করে মাঠে নামার চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ। নামসর্বস্ব ‘মুভমেন্ট ফর এ ফ্রি প্যালেস্টাইন’-এর ব্যানারে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করছেন দলটির নেতাকর্মীরা। পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছে আওয়ামী লীগের দোসর ইসলামী ফ্রন্ট। আগামীকাল শনিবার তারা ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে চায়। বিষয়টি অবগত করে ইতিমধ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)’ কমিশনারের কাছে একটি চিঠিও দিয়েছে দলটি। এই চিঠি ডিএমপি পাওয়ার পর মাঠপর্যায়ে তদন্ত শুরু করেছে গোয়েন্দারা। তবে গতকাল রাত পর্যন্ত তাদের সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ সমাবেশ বাস্তবায়নে আওয়ামী লীগসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ফেসবুক পেজে প্রচার চালানো হচ্ছে। ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন এ সমাবেশ নিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছেন। পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘নির্যাতিত-নিপীড়িত ফিলিস্তিনের পাশে বাংলাদেশ। ২৬ এপ্রিল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান।’ এ ছাড়াও বিতর্কিত বক্তা গিয়াস উদ্দিন তাহেরীও তার ফেসবুকে পেজে এ সমাবেশের প্রচার চালান। ওই পোস্টে আবার লাইকও দিয়েছেন ছাত্রলীগের জাকির।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, গণআন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগের পতনের পর দলটির নেতাকর্মীরা বিভিন্ন রূপে মাঠে নামার চেষ্টা করেছে। সম্প্রতি তাদের ঝটিকা মিছিলের কারণে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। গ্রেপ্তারও করা হয়েছে অনেককে। ফলে বেকায়দায় থাকা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ফিলিস্তিন ইস্যুতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করছেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, তারা মাঠপর্যায়ে তদন্ত করে নাশকতা করা হতে পারে এমন তথ্য পেয়েছে। ফিলিস্তিন ইস্যুতে আওয়ামী লীগ সমাবেশ করে যাতে মাঠে কোনো ধরনের অরাজকতা করতে না পারে, সেদিকে সতর্ক রয়েছে পুলিশ।
এ বিষয়ে মুভমেন্ট ফর এ ফ্রি প্যালেস্টাইনের মিডিয়া ও যোগাযোগ উপকমিটির সদস্য আব্দুল হাকিম জানান, তারা ফিলিস্তিন ইস্যুতে একটা সমাবেশ করতে চান। এজন্য ১৫ এপ্রিল ডিএমপি কমিশনার বরাবর একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে।
আয়োজকদের সঙ্গে পতিত সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ফেসবুকে ছবি রয়েছেÑ সে বিষয়ে জানতে চাইলে নীরব থাকেন আব্দুল হাকিম। ফেসবুকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন এ সমাবেশ নিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন, বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি কলটি কেটে দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএমপির এক অতিরিক্ত কমিশনার জানান, ব্যানার যাই হোক, এই আয়োজনটি করতে যাচ্ছে ইসলামী ফ্রন্ট নামের দল। যাদের অতীতের রেকর্ড খুব একটা ভালো নয়। ডিবির একটি দল ইতোমধ্যে গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করেছে। এ ছাড়াও সোশ্যাল মিডিয়াও নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
জানা যায়, ২০২৪ সালের আওয়ামী লীগের পাতানো নির্বাচনে ইসলামী ফ্রন্ট ৩৭টি আসনে চেয়ার প্রতীকে প্রার্থী দিয়েছিল।
ডিএমপির একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২ এপ্রিল থেকে মুভমেন্ট ফর এ ফ্রি প্যালেস্টাইনের সমাবেশ করার জন্য ইসলামী ফ্রন্টের নেতাকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা চালানো শুরু করেছে।
সূত্র জানায়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ নিয়ে গোয়েন্দারা মাঠে কাজ করছেন। কারা এ আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত তাদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সমাবেশের নামে যাতে কোনো নাশকতা করতে না পারে, সেদিকে সতর্ক রয়েছে পুলিশ।
গতকাল রাত পর্যন্ত সমাবেশের কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি। ডিএমপির একটি সূত্র জানিয়েছে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ওই ব্যানারে সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না।’