
নিজস্ব প্রতিবেদক: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও সামাজিক মাধ্যমের অপব্যবহার বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে বিভ্রান্তিকর তথ্য, বানোয়াট ভিডিও এবং প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ইতোমধ্যে এই ঝুঁকি স্পষ্ট করেছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন বলেন, এআই ব্যবহার করে ভুয়া তথ্য ও ভিডিও ছড়ানো হচ্ছে, যা বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। তিনি যাচাই না করে কোনো তথ্য বিশ্বাস বা প্রচার না করার আহ্বান জানান।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আগামী বছর ১৫ ফেব্রুয়ারির আগেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনও (ইসি) পথনকশা প্রকাশ করেছে এবং চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ করবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সংলাপে সমান প্রতিযোগিতার পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং এআই অপব্যবহার মোকাবিলায় দলগুলোর প্রতিশ্রুতি নেওয়া জরুরি।
প্রচারণায় নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ইসি। সামাজিক মাধ্যমে নির্বাচনী কনটেন্ট প্রকাশের আগে ফ্যাক্ট-চেক বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। দেয়াল লিখন নিষিদ্ধ এবং পোস্টার ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে। তবে কর্মী ও সমর্থকদের সচেতনতার অভাবে এসব বাস্তবায়ন কঠিন হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ বলেন, ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ভোট বর্জনের প্রবণতা দেখা গেছে, যা জাতীয় নির্বাচনেও ঘটতে পারে। নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক রাখতে ইসিকে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণে প্রস্তুত থাকতে হবে।
নির্বাচন বিশ্লেষক ড. আব্দুল আলীম মনে করেন, আসন্ন নির্বাচনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে সামাজিক মাধ্যমে অপপ্রচার মোকাবিলা করা। তার মতে, রাজনৈতিক দলগুলোর এখনই অঙ্গীকার করা দরকার যে তারা এআইয়ের অপব্যবহার রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে এবং নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেবে।
বিশ্লেষকদের মতে, বিতর্কমুক্ত নির্বাচন নিশ্চিত করতে ইসি ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গঠনমূলক বোঝাপড়া জরুরি। অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ কেবল আনুষ্ঠানিকতায় সীমাবদ্ধ না থেকে বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্তে পৌঁছানোই হবে ইসির বড় পরীক্ষা।