ডেস্ক রিপোর্ট: নির্বাচনি গণসংযোগকালে চট্টগাম-৮ আসনের প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর ওপর হামলার পর অন্যান্য আসনেও বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও মনোনয়নপ্রত্যাশীরা উৎকণ্ঠিত হয়ে পড়েছেন। জামায়াত-শিবির এই হামলা করেছে বলে দাবি নগর বিএনপির। তাছাড়া রাউজানে মনোনয়নপ্রত্যাশী দুই বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী ও গোলাম আকবর খোন্দকারের দ্বন্দ্বেও একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটছে।
সর্বশেষ বুধবার রাতে রাউজানে বিবদমান দুপক্ষের গোলাগুলিতে পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে অস্ত্রের ঝনঝনানি।
অন্য আসনে মনোনয়নপ্রাপ্ত ও মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রার্থীরা বলছেন, এসব ঘটনা তাদের জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে। তাই থানা থেকে লুণ্ঠিত আগ্নেয়াস্ত্রসহ আন্ডারওয়ার্ল্ডে ব্যবহার হওয়া সব ধরনের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও দলমত নির্বিশেষে অপরাধী ও চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন তারা।
এদিকে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত বোয়ালখালী-চান্দগাঁও আসনের প্রার্থী ও চট্টগ্রাম নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহকে দেখতে বুধবার রাতে এবং বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালে যান চট্টগ্রামের বিভিন্ন আসন থেকে বিএনপির মনোনয়নপ্রাপ্ত ও মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতারা। তারা সবাই এরশাদ উল্লাহর ওপর হামলার ঘটনাকে নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টার অংশ বলে মনে করছেন। যদিও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ বলেছেন, ওই হামলায় এরশাদ উল্লাহ টার্গেট ছিলেন না। টার্গেট যিনি ছিলেন সেই সন্ত্রাসী সরোয়ার বাবলা নিহত হয়েছেন।
বুধবার সন্ধ্যায় বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন হামজারবাগ চালিতাতলী এলাকায় গণসংযোগকালে সন্ত্রাসীরা গুলিবর্ষণ করলে একজন নিহত ও বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহসহ অন্তত তিনজন গুলিবিদ্ধ হন।
এরশাদ উল্লাহকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী লায়ন আসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রাপ্ত ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হুম্মাম কাদের চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী আবু সুফিয়ান, চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে মনোনয়নপ্রাপ্ত এনামুল হক এনাম। এ ছাড়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনও এরশাদ উল্লাহকে দেখতে যান।,
গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী বলেন, একজন প্রার্থীর ওপর এভাবে প্রকাশ্যে গুলি করার ঘটনা তাদের জন্যও উদ্বেগজনক। নির্বাচন বানচাল করার জন্যই একটি মহল এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার অপচেষ্টা করছে বলে তিনি মনে করছেন।
বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও হাটহাজারীতে বিএনপির মনোনয়নপ্রাপ্ত ব্যারিস্টার মীর হেলাল বলেন, এমন হামলার ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। এই ঘটনা অবশ্যই অন্য প্রার্থীদের জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে। তিনি বলেন, দোষীদের অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। চট্টগ্রামসহ সারা দেশে থানা লুটের যেসব অস্ত্র এবং অবৈধ অস্ত্র রয়েছে সেসব উদ্ধার করতে হবে। সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করতে হবে।
হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেন, দেশ এখন নির্বাচনমুখী। শান্তিপূর্ণ প্রচারণা চলছে। এই অবস্থায় প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত। আশা করছি, সামনে এ ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না। প্রশাসন কঠোর হবে।
চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, সন্ত্রাসীদের কোনো দল, ধর্ম বা জাত নেই। সন্ত্রাসী সন্ত্রাসীই। পেশাদার সন্ত্রাসীরা ঠান্ডা মাথায় ঘাড়ের পেছনে গুলি করে সরোয়ার নামে একজনকে হত্যা করেছে। এতগুলো লোকের সামনে এ ধরনের ঘটনা সংঘটিত করা পেশাদার সন্ত্রাসী ছাড়া সম্ভব নয়। তিনি প্রশাসনের প্রতি সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান।,
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.