
জুয়েল রানা, জুলাই অভ্যুত্থানের পর সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা থানার উনুখাঁ পাগলা পীর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো:জাহিদুল ইসলাম (জাহিদ) গত ১০ মাস ধরে বিনা নোটিশে অনুপস্থিত রয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শিক্ষক জাহিদ সলঙ্গা থানার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলিগের সভাপতি ছিলেন, বিগত সরকারের সময় রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এলাকার বিচার সালিশ, স্কুল,মাদ্রাসার নিয়োগ বানিজ্যসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে জনরোষ ও নিরাপত্তাহীনতায় তিনি আর কর্মস্থলে ফিরতে পারছেন না,তবে নিয়মিত বিদ্যালয়ের সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
একাধিক অভিভাবক বলেন, এই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ মোট ২২ জন শিক্ষক কর্মচারী রয়েছেন। সরকার পতনের পরে শিক্ষক জাহিদ পলাতক রয়েছেন তিনি বিদ্যালয়ে না আসায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যহত হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, জাহিদুল ইসলাম (জাহিদ) সে সলঙ্গা থানার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন,এবং তার বড় ভাই রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও তার ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ছিলেন, দুই ভাই মিলে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রভাব বিস্তার করে রেখেছিলেন সকল জায়গায়। তিনি বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে তেমনটা ক্লাস নিতেন না। দল ক্ষমতায় থাকা কালিন সময় প্রতিদিন বিদ্যালয়ে এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে চলে যেতেন। বিষয়টি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস জানলেও জাহিদের বিরুদ্ধে কোন আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় শিক্ষক হাজিরা খাতায় গত ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে কয়েক দিন হাজিরা খাতায় উপস্থিত স্বাক্ষর থাকলেও পরর্বতী ১০ মাস হাজিরা খাতায় অনুপস্থিত থাকতে দেখা যায়।
এদিকে উনুখাঁ পাগলা পীর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইসমাইল হোসেন তালুকদার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, বর্তমানে তার বিদ্যালয়ে প্রায় ৭ শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। জাহিদ না আসায় তাকে দুইবার শোকজ করা হয়েছে, তার তথ্য ও গ্রন্থানাগার বিজ্ঞান ক্লাস অন্য শিক্ষকদের দিয়ে চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে, সরকার পতনের পরে জাহিদ বিদ্যালয়ে না এসে তিনবার অসুস্থ্য দেখিয়ে মেডিকেল ছুটির আবেদন দিয়েছেন, সেই মেডিকেল ছুটির আবেদনের কাগজ বিদ্যালয়ের সভাপতির দায়িত্বে থাকা উল্লাপাড়া যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়ে দিলে তিনি ছুটি না মঞ্জুর করে দেখতেছি বলে কাগজ রেখে দেন, এমনকি বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসকেও অবহিত করা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের বর্তমান দায়িত্বেপ্রাপ্ত সভাপতি উল্লাপাড়া উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম (মোগল) জানান জাহিদুল ইসলাম জাহিদ ছুটি চেয়ে অসুস্থ দেখিয়ে তিনবার মেডিকেল ছুটির আবেদন জমা দিয়েছেন তার বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সাথে কথা হয়েছে আমরা খুব তারাতারি এর বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সহকারী শিক্ষক মো:জাহিদুল ইসলাম (জাহিদ) বলেন, আমার এই বিষয় টা নিয়ে কিছু করবেন না আমি বাহিরে আছি পরে আপনাদের সাথে কথা হবে বলে ফোন কেটে দেন, তার পরও একাধিক বার ফোন করলে তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেন নাই।
এবিষয়ে উল্লাপাড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার
আব্দুল কাদের বিশ্বাস বলেন, জাহিদ ছুটি চেয়ে তিনবার মেডিকেল রিপোর্ট দিয়েছে গত এক বছর ধরে তো অসুস্থ থাকেনা অসুস্থ কিনা যাচাই করে এই সিদ্ধান্ত টা নিবেন স্কুলের সভাপতি এবিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেজানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।