নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও চার শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন—এরিকসন (১৩), আরিয়ান (১৩), নাজিয়া (১৩) ও সায়ান ইউসুফ (১৪)।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার দিবাগত রাত সোয়া ৩টার দিকে তাদের মৃত্যু হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান। তিনি জানান, এরিকসনের শরীরের ১০০ শতাংশ, আরিয়ানের ৮৫ শতাংশ, নাজিয়ার ৯০ শতাংশ এবং সায়ান ইউসুফের ৯৫ শতাংশ দগ্ধ ছিল।
এ নিয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ জনে।
তবে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)-এর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ২০ জন। এর মধ্যে পরিচয় শনাক্ত হওয়া আটজনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আইএসপিআর-এর সোমবার রাত ৮টার বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এ দুর্ঘটনায় ১৭১ জন আহত হয়েছেন। তারা রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতওয়ারি আহত ও নিহতের হিসাব নিচে তুলে ধরা হলো—
১. কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল: আহত ৮, নিহত নেই
২. জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউট: আহত ৭০, নিহত ২ (পরবর্তী তথ্য অনুযায়ী মৃত ৯)
৩. ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল: আহত ৩, নিহত ১
৪. সিএমএইচ-ঢাকা: আহত ১৭, নিহত ১২
৫. কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল: আহত ১, নিহত ২
৬. লুবনা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড কার্ডিয়াক সেন্টার, উত্তরা: আহত ১১, নিহত ২
৭. উত্তরা আধুনিক হাসপাতাল: আহত ৬০, নিহত ১
৮. উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতাল: আহত ১, নিহত নেই
আইএসপিআরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে দুইজনের মৃত্যুর কথা বলা হলেও পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, আরও সাতজন সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
রাত ১০টা থেকে সোয়া ৩টার মধ্যে পর্যায়ক্রমে মাহেরীন চৌধুরী (৪০), আফনান (১৪), আব্দুল্লাহ সামিন (১৪) ও সর্বশেষ চার শিক্ষার্থীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়।
বর্তমানে বার্ন ইনস্টিটিউটে আরও ৪২ জন রোগী বিভিন্ন ওয়ার্ড ও আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানান ডা. শাওন বিন রহমান।
দুর্ঘটনার পটভূমি
সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর ১টার কিছু পর বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনার পরপরই ভবনে আগুন ধরে যায়।
বিমানটি যেই ভবনে পড়ে, সেখানে বহু শিক্ষার্থী অবস্থান করছিলেন। ফলে হতাহতের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে।
দুর্ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট উদ্ধারকাজে অংশ নেয়। পরে সেনাবাহিনী ও বিজিবি উদ্ধারকাজে সহায়তা করে। বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার ব্যবহারের মাধ্যমে আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় গভীর শোক জানিয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আগামীকাল মঙ্গলবার জাতীয়
শোক দিবস পালনের ঘোষণা দিয়েছে সরকার।
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.