নিজস্ব প্রতিবেদক: ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি (আইবিবিএল) অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত অদক্ষ কর্মীদের কারণে প্রতিবছর প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছে। গত সাত বছরে এই ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকারও বেশি।
তদন্তে জানা গেছে, এস আলম গ্রুপ-সংশ্লিষ্ট পূর্ববর্তী ব্যবস্থাপনা কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বা আনুষ্ঠানিক পরীক্ষা ছাড়াই অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন শ্রেণির ৮ হাজার ৩৪০ জনের বেশি কর্মী নিয়োগ দিয়েছিল। তাদের মধ্যে অনেকে জাল শিক্ষাগত সনদ ব্যবহার করে চাকরিতে যোগ দেন। ইতোমধ্যে কিছু কর্মীর জালিয়াতির প্রমাণ মেলায় বরখাস্ত করা হয়েছে, তবে যোগ্যতা যাচাই প্রক্রিয়া এখনো চলছে।
সম্প্রতি দক্ষতা যাচাই পরীক্ষায় অংশ নিতে বলা হলে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মীদের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ অংশগ্রহণ না করে পরীক্ষা বর্জন করেন। তারা সংবাদ সম্মেলন, প্রচারাভিযান এবং বিভিন্ন মাধ্যমে বর্তমান ব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। ব্যাংকের ফেসবুক পেজ হ্যাকড হওয়ার ঘটনাতেও তাদের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠেছে।
ব্যাংকের সাবেক এক পরিচালক বলেন, অদক্ষ কর্মীদের বিদ্রোহী আচরণ গ্রাহকের অর্থের নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলছে। তাদের অবাধ্যতা ব্যাংকের ভল্ট ও ক্যাশ কাউন্টার পর্যন্ত নিরাপত্তাহীন করে তুলতে পারে।
অদক্ষ নিয়োগের কারণে গ্রাহকসেবার মানও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ব্যাংকটির সুনাম নষ্ট হয়ে গ্রাহকদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
মানবসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এস আলম-সমর্থিত পূর্ববর্তী ব্যবস্থাপনার সময়ে নিয়োগপ্রাপ্ত অনেক কর্মী নিয়মনীতি মানেননি, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রতি অসহযোগিতা করেছেন এবং নিজেদের পছন্দমতো বদলি আদায় করেছেন। এতে ব্যবস্থাপনায় অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ইসলামী ব্যাংকের অবৈধ নিয়োগ ও আর্থিক অনিয়ম পুরো ব্যাংক খাতের স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।
ইপেপার
Copyright © 2025 ThikanaTV.Press. All rights reserved.